TMC Leader Death

ফেসবুক লাইভে নিজেকে শেষ করলেন তৃণমূল নেতা, স্ত্রীকে প্রধান করতে টাকা ধার? অভিযোগ ওড়াল দল

মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে এসে বিষ খেয়েছিলেন নিমতিতার তৃণমূল নেতা বিশ্বনাথ হালদার। তড়িঘড়ি তাকে জঙ্গিপুর মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। বুধবার মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১২:১৯
Unnatural death of a TMC leader creates uproar at Shamsherganj of Murshidabad

ফেসবুক লাইভে এসে নিজেকে শেষ করলেন তৃণমূল নেতা। প্রতীকী চিত্র।

স্ত্রীকে প্রধান করতে লক্ষ লক্ষ টাকা ‘ঘুষ’ দিয়েও ‘প্রতারিত’! ফেসবুক লাইভে এই অভিযোগ তুলে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন তৃণমূলের এক নেতা। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের নিমতিতা এলাকায়। ওই তৃণমূল নেতা অভিযোগ করেন, স্ত্রীকে প্রধান করতে টাকা ধার করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ‘প্রতারিত’ হওয়ায় পাওনাদারদের চাপে তিনি এই পদক্ষেপ করছেন। একই অভিযোগ করছে মৃত তৃণমূল নেতার পরিবারও। তবে কাকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি মৃতের পরিবারের সদস্যেরা। যদিও ওই তৃণমূল নেতার পরিবারের সেই অভিযোগ মানতে নারাজ দল। এই ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।

মঙ্গলবার সকালে ফেসবুক লাইভে এসে বিষ খেয়েছিলেন শমসেরগঞ্জের নিমতিতার তৃণমূল নেতা বিশ্বনাথ হালদার (৪৫)। তড়িঘড়ি তাকে জঙ্গিপুর মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। ফেসবুক লাইভে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মইদুল ইসলাম, পঞ্চায়েত সদস্য আজ়ফারুল হক এবং তাজমুল হক ছাড়া আরও দু’জন জড়িত রয়েছে বলে দাবি করেন বিশ্বনাথ। ধার করে এবং গয়না বিক্রি করে তাঁদের কয়েক লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বিশ্বনাথ জানিয়েছেন, টাকা দেওয়ার পরেও তাঁর স্ত্রী প্রধান হননি। এর পর পাওনাদারদের চাপে তিনি এমন পদক্ষেপ করছেন বলেও জানান। মৃত তৃণমূল নেতার স্ত্রী মালা হালদার বলেন, ‘‘আমার স্বামী অনেক টাকা ধার করেছিল শুনেছি। কিন্তু সেই টাকা কাকে, কেন দিয়েছে তা জানি না। তবে নিশ্চয়ই কিছু আছে। না হলে কেউ এ ভাবে আত্মহত্যা করে না।’’

Advertisement

আবার একই সুরে মৃত তৃণমূল নেতার ভাই সৌমিত্র হালদার বলেন, ‘‘বৌদিকে প্রধান করার জন্য খুব চেষ্টা করেছিল দাদা। ও অনেক টাকাপয়সাও জোগাড় করেছিল। তবে সেই টাকা ও কাকে দিয়েছে তা বলতে পারব না।’’ যদিও বিশ্বনাথের পরিবারের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মইদুলের দাবি, ‘‘প্রধান নির্বাচিত হয়েছে জেলা স্তর থেকে। তাই টাকা দেওয়ার বা টাকা নেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। ওই অভিযোগ মিথ্যা।’’

বিশ্বনাথের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘প্রধান নির্বাচনের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। তাই এ ধরনের অভিযোগের কতটা সারবত্তা আছে তা খতিয়ে দেখা হবে। এমন কিছু হয়েছে বলে মনে হয় না।’’

এই ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রার্থী হতে ব্যালট বাক্স চুরি করা হচ্ছে। সেখানে প্রধান হতে ঘুষ দেওয়া হবে এটাই স্বাভাবিক।’’

এ নিয়ে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ভিজি সতীশ বলেন, ‘‘দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের বয়ানের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement