Mukul Roy: মুকুলের অনুপস্থিতি কাঁটা পুরভোটে

অভিযোগ উঠছে যে, প্রয়োজনের সময় বিধায়কের কাছে মানুষ যেতে পারছেন না। বিধায়কের সই, শংসাপত্র এবং সুপারিশ প্রয়োজন হয় অনেক কাজে। তা পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement
সুস্মিত হালদার 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১১
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিধানসভা ভোটের পর কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু একটা দীর্ঘ সময় ধরে দেখা মিলছে না কৃষ্ণনগর-উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়ের। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে এলাকার সাধরণ মানুষকে।

অভিযোগ উঠছে যে, প্রয়োজনের সময় বিধায়কের কাছে মানুষ যেতে পারছেন না। বিধায়কের সই, শংসাপত্র এবং সুপারিশ প্রয়োজন হয় অনেক কাজে। তা পাওয়া যাচ্ছে না। উন্নয়নের অনেক কাজও থমকে যাচ্ছে। ফলে যত দিন যাচ্ছে বিষয়টি নিয়ে ততই অস্বস্তি বাড়ছে শাসক দলের। কারণ সামনেই পুরসভা ভোট। বিধায়ককে নিয়ে মানুষের এই ক্ষোভ ভোট বাক্সে প্রতিফলিত হলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। বিরোধীরা বিষয়টিকে অন্যতম ইস্যু করতে চলেছে। কিন্তু সমাধানের আশাও দেখছেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতারা।

Advertisement

রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, তিনি অসুস্থ। কিন্তু অসুখটা কতটা গুরুতর বা ঠিক কবে থেকে তাঁকে আবার কৃষ্ণনগরে নিয়মিত পাওয়া যাবে, কিছুই স্পষ্ট না হওয়ায় জটিলতা বেড়েছে। ভোটের আগে প্রচারেও তাঁকে তেমন ভাবে দেখা যায়নি বলে কথা উঠেছিল। সে সময়েও তিনি বেশির ভাগ সময় সাধারণের ধরাছোঁওয়ার বাইরে দলীয় অফিসের চার দেওয়ালের মধ্যেই নিজেকে বন্দি রাখতেন। সাংবাদিকদেরও এড়িয়ে যেতেন।

ভোটে জেতার পর বিজেপিতে থাকার সময় তিনি কৃষ্ণনগরে এসেছিলেন। মাস ছ’য়েক আগে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তিনি এক বার কৃষ্ণনগরে আসেন। সে বার সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন যে, অসম ভোটে বিজেপি জিতবে। হারবে তৃণমূল। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁর এ হেন বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন ফেলে দেয় ও অন্যতম আলোচ্চ বিষয় হয়ে ওঠে।

সেই ঘটনার পর মুকুলবাবুকে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে আর দেখা যায়নি। যদিও দিন সাতেক আগে তিনি কৃষ্ণনগরে এসে ঘণ্টা খানেক থেকে আবার ফিরে যান। শহরের বাইরে একটি নামী হোটেলে উঠেছিলেন তিনি। শহরের কয়েক জন তৃণমূল নেতা তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছিলেন। ঘন্টাখানেক সেখানে থেকে তিনি বেরিয়ে যান বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সে দিনও এলাকার উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। এর আগে বাইরে থেকে এসে কৃষ্ণনগর-উত্তর কেন্দ্রে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছিলেন অবনীমোহন জোয়ারদার। তিনি থাকতেন কলকাতায়। এখানে একটি ঘর ভাড়া করে রেখেছিলেন। সেটাই ছিল বিধায়কের অফিস। মাঝেমধ্যে কৃষ্ণনগরে এলে ওই বাড়িতেই থাকতেন। তিনি মারা যাওয়ার পর দীর্ঘ দিন এই কেন্দ্রে কোনও বিধায়ক ছিল না। এরপর মুকুল রায় বিধায়ক হওয়ার পরও তাঁকে পাচ্ছেন না স্থানীয় মানুষ।

কৃষ্ণনগরের এক তৃণমূল নেতার কথায়, “সাধারণ মানুষের কাছে তো আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে। আটকে থাকছে কাজ। অনেক ক্ষেত্রে মুকুলবাবুর কাঁচড়াপাড়ার বাড়িতে গিয়ে শংসাপত্র সই করিয়ে আনতে হচ্ছে। এ ভাবে কত দিন চালানো যায়। তাঁর কাজ সামলানোর দায়িত্বও মুকুলবাবু কাউকে দিয়ে যাননি।’’ এ ব্যাপারে মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

বিজেপির নদিয়া-উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলছেন, “আমাদের দলে যত দিন ছিলেন তত দিন কিন্তু এমন পরিস্থিতি ছিল না। তিনি নিয়মিতই কৃষ্ণনগরে আসতেন। আসলে তৃণমূলে গিয়ে আশা অনুযায়ী কিছু না হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। সেই সঙ্গে আশাহত করেছেন তাঁর কেন্দ্রের মানুষকে। এর দায় তৃণমূলকেই নিতে হবে।”

যা শুনে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জয়ন্ত সাহা বলছেন, “সপ্তাহখানেক আগেও মুকুলবাবু কৃষ্ণনগরে এসেছিলেন। তিনি নিজের মতো করে কৃষ্ণনগরের মানুষের উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাকিটা আমরা সাংগঠিক ভাবে সামাল দিচ্ছি।”

আরও পড়ুন
Advertisement