নিজস্ব চিত্র।
গোড়া থেকেই মনোমালিন্য ছিল। তা-ই শুক্রবার নেমে এল কৃষ্ণনগরের রাজপথে। পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন বিরোধী কাউন্সিলরেরা। তারা কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রধান গেটের সামনে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ করেন। যদিও পুর কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
পুর নির্বাচনের টিকিট বণ্টনের সময় থেকেই বিবাদের সূত্রপাত। পুরনো যে সব তৃণমূল কাউন্সিলর দলের টিকিট পাননি তাঁদের একাংশ নিজের নিজের ওয়ার্ডে কেউ নির্দল, কেউ কংগ্রেস, কেউ কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হয়ে যান। এঁদের মধ্যে কয়েক জন জিতেওছেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টি জেতে তৃণমূল, বাকি ন’টিতে জয়ী হন বিরোধীরা। এর মধ্যে এক জন আবার বিজেপির। এঁদের মধ্যে ছ’জন বিরোধী কাউন্সিলর এ দিনে অবস্থান বিক্ষোভে যোগ দেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, এই বিরোধী কাউন্সিলরেরা প্রথম থেকেই একজোট হয়ে নানা বিষয়ে কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন। যেমন জমির নামপত্তনের সময় মোট মূল্যের উপর এক শতাংশ কর, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ বা রাস্তা সংস্কার ও দরপত্র প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলতে থাকেন। সম্প্রতি তাঁরা পুরপ্রধানের কাছে বেশ কয়েকটি স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বোর্ড মিটিংয়ে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এবং তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
শুক্রবার পুরসভায় বোর্ড মিটিং শুরু হলে বিরোধী কাউন্সিলরেরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। বেশ কয়েকটি বিষয় সভায় আলোচনার দাবিও জানান। শুরু হয় চেঁচামেচি। বিরোধী কাউন্সিলরদের অভিযোগ, আলোচনা তো দূরের কথা, তাঁদের কয়েক জনকে বৈঠক থেকে কার্যত বার করে দেওয়া হয়।
ছ’জন কাউন্সিলর বেরিয়ে এসে পুরসভার প্রধান গেটের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী, কংগ্রেসের শান্তশ্রী সাহার বক্তব্য, “পুরসভাকে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত করতে লড়াই চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে বড় আন্দোলনে নামব। কোনও রকম আপসে আমরা রাজি নই। এই শহরের মানুষ আমাদের পাশে আছেন।”
বিজেপি কাউন্সিলর বর্ণালী গুইন দত্তের দাবি, “এত দিন পুরসভাকে ওরা লুটে খেয়েছে। এ বার আর সেটা হতে দেওয়া যাবে না। আমরা শহরের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ।” তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর আমাদের মহিলা কাউন্সিলরকে ধাক্কা দিয়ে বার করে দিয়েছে।”
কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান, তৃণমূলের রিতা দাস অবশ্য এই নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।