শান্তিপুরের জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
উন্নয়নের নিরিখে কেন্দ্র সরকারের তুলনায় বেশ কয়েক কদম এগিয়ে রাজ্য সরকার। এ কথা তথ্য এবং পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করতে না পারলে তিনি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখবেন না। মঙ্গলবার নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে এই ভাষাতেই বিঁধলেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
শান্তিপুরে বিধানসভা উপ নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী। তাঁর সমর্থনেই শান্তিপুরে মঙ্গলবার জনসভা করেন অভিষেক। সেখানে তিনি তুলে ধরেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক হিংসার প্রসঙ্গ। সেই কথার সূত্র ধরেই বিজেপি-কে বিঁধেছেন তিনি। অভিষেকের কথায়, বাংলাদেশের ঘটনা ‘ন্যক্কারজনক’। তবে ওই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথাও উঠে এসেছে অভিষেকের বক্তব্য। এ নিয়েই তাঁর কটাক্ষ, ‘কারও সর্বনাশ তো কারও পৌষ মাস।’ অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘হিন্দু ধর্মের ধারক আর বাহক বলে যাঁরা নিজেদের দাবি করেন, আপনাদের কাছে ভোট চান। সাত বছর কেন্দ্রে সরকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁদের জিজ্ঞাসা করি, মোদীর আমলে নদিয়ার জন্য, হিন্দু ধর্মের জন্য, বৈষ্ণব ধর্ম, সনাতন ধর্মের জন্য, সর্ব ধর্ম সমন্বয় রক্ষা করার জন্য বিজেপি কী করেছে?’’ এর পর চ্যালেঞ্জের সুরে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘এক দিকে আমি থাকব। আর এক দিকে বিজেপি-র নেতা থাকবেন। যে কোনও মঞ্চ বেছে নিন। সময়, তারিখ, জায়গা, সঞ্চালক আপনি ঠিক করুন। সাত বছরে মোদি কী করেছেন সেই রিপোর্ট কার্ড আপনি নিয়ে যাবেন, আর ১০ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছেন সেই রিপোর্ট কার্ড নিয়ে যাব আমি। উন্নয়ন, পরিসংখ্যান আর তথ্যের নিরিখে লড়াই হবে। যদি না ১০-০ গোল নিয়ে আপনাদের মাঠের বাইরে করতে পারি তা হলে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না। এত বড় কথা বলে দিয়ে যাচ্ছি।’’
গত বিধানসভা নির্বাচনে শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তবে তিনি ফিরে গিয়েছেন সংসদের চৌহদ্দিতেই। তা নিয়ে অভিষেকের তোপ, ‘‘মানুষের রায়কে প্রত্যাখ্যান করে মন্ত্রী হয়ে বা সাংসদ হয়ে দিল্লির চাটুকারিতা করছে। বিজেপি শান্তিপুরের জন্য কী করবে? সাংসদ জগন্নাথ সরকার শান্তিপুরের মানুষের জন্য কী করেছেন? ওঁরা দিল্লির তল্পিবাহক। তাঁদের কাছে নম্বর বাড়ান।’’ অভিষেকের মতে, ‘‘বিজেপি করোনার থেকেও খারাপ ভাইরাস। ওদের টিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম টিকাটা আপনারা দেবেন ৩০ নভেম্বর। আর দ্বিতীয় টিকাটা দেবেন আগামী ২০২৪ সালে।’’
গত বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে শান্তিপুর কেন্দ্রে এগিয়ে বিজেপি। ওই কেন্দ্রে তারা জয় পেয়েছিল ১৫ হাজার ৮৭৮ ভোটে। তবে আত্মবিশ্বাসের সুরে অভিষেক বলছেন, ‘‘আমার কাছে যা পরিসংখ্যান আছে এখনও পর্যন্ত তাতে বিধানসভা উপনির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতব। তবে ব্যবধান আরও বাড়াতে হবে। আমি চাই চারটি কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবধান যেন এখান থেকে হয়।’’
বিজেপি-র মতো কংগ্রেস এবং সিপিএম-কেও তোপ দেগেছেন অভিষেক। তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মতে, ‘‘কংগ্রেস এবং সিপিএম তাদের আদর্শ চৈত্র সেলের মতো বিজেপি-র কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। এক মাত্র তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঠে ময়দানে আছে। আমাদের উপর যত আঘাত আসুক আমরা মাথা নত করব না।’’