প্রতীকী ছবি।
কোভিড বিধিনিষেধে যখন বাস, ট্রেন বন্ধ, যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা চলছে তখন ফের জাল নোট ও মাদকের পাচারকারীরা সক্রিয় হল কী ভাবে তা চিন্তা বাড়িয়েছে জঙ্গিপুর জেলা পুলিশের।
শনিবার সকালে ফরাক্কায় জালনোট মেলার পর রাতে সুতির সীমান্ত পথে মেলে মাদক ট্যাবলেট ইয়াবা। একই দিনে জোড়া হানায় পাচার রুখতে বড়সড় সাফল্য পেলেও হঠাৎ করে কড়া বিধিনিষেধের মধ্যেই পাচারকারীরা কীভাবে তা সংগ্রহ করল সেটাই ভেবে পাচ্ছে না পুলিশ। শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ নিউ ফরাক্কা বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সতীশ মিশ্র নামে এক জালনোটের কারবারি ২ লক্ষ টাকার জালনোট সহ।
এদিনই রাতেই সুতি হাসানপুরের কাছে গঙ্গা পেরিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে যাওয়ার পথে ৩০ হাজার মাদক ট্যাবলেট সহ সুতি থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে মহম্মদ সোহেল নামে এক বাংলাদেশি পাচারকারী। তার এক সঙ্গী অবশ্য রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়।
করোনার বিধিনিষেধের মধ্যে শনিবার সকালে জাল নোট ও রাতে ইয়াবা মাদক পাচারের জোড়া ঘটনা সামনে আসায় পুলিশও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। চেনা পথ বৈষ্ণবনগর থেকে ফরাক্কা হয়ে ট্রেন পথে বিহারের আড়ায় ফিরে যাওয়ার ট্রেন ধরতেই স্টেশনে যাচ্ছিল। তখনই ফরাক্কা থানার পুলিশ ও জঙ্গিপুর জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের হাতে জাল টাকা সহ ধরা পড়ে সে।
পুলিশ জানায়, করোনার বিধিনিষেধে যান চলাচল বন্ধ থাকায় যাতায়াত সম্ভব হচ্ছিল না বলে জাল নোট ও মাদকের করিডর এতদিন বন্ধই ছিল। ফলে কিছু কারবারির কাছে প্রচুর টাকার জাল নোট ও মাদক জমে রয়েছে কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর এলাকায়।
এখন সেই সব জমে থাকা জাল নোট ও মাদক যেভাবেই হোক পাচারে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে তারা। মাত্র ২০ হাজার ভারতীয় টাকায় এক লক্ষ টাকার জাল নোট মিলছে বৈষ্ণবনগরে।
আসল ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সতীশও কেনে ২ লক্ষ টাকার জালনোট বৈষ্ণবনগরের আঠের মাইল গ্রাম থেকে। এদিনের ইয়াবাও মাদক ট্যাবলেটও এসেছে কালিয়াচক থেকে।
সাধারণ সময়ের অর্ধেক দামে মিলছে মাদক ট্যাবলেট। বাংলাদেশে মদ নিষিদ্ধ হওয়ায়, ট্যাবলেট খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে মারাত্মক ভাবে। মাদক হিসাবে সেই ট্যাবলেটের বিশাল বাজার রয়েছে বাংলাদেশে। এ বছরের ৪ মাসে বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড সূত্রে জানা গেছে, ৪৭.৬৩ লক্ষ ট্যাবলেট ধরা পড়েছে সীমান্তে। তারমধ্যে সব চেয়ে বেশি ধরা পড়েছে এপ্রিল মাসে ১৬.৯৮ লক্ষ।
পুলিশ জানায়, জাল নোট ও মাদক পাচারে ধৃতরা দুজনেই বহিরাগত। স্থানীয় এলাকার কোথাও আশ্রয় পেয়েছিল তারা।
যেভাবে এই জাল নোট ও মাদক তারা সংগ্রহ করেছে তাতে পুলিশ নিশ্চিত কেনাবেচার ঘাঁটি সম্পর্কে তারা ভালভাবেই ওয়াকিবহাল। তাই পুলিশ জানতে চেষ্টা করছিল কার কাছ থেকে মাদক ও জাল নোটগুলি তারা এনেছে।