Nabadwip

সুপ্রিয়া খুনের পুনর্নির্মাণ, পাওয়া গেল দা আর চেয়ার

মঙ্গলবার সুপ্রিয়ার ঘর থেকে নীল রঙের সেই চেয়ারটি ‘সিজ’ করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে একটি ধারালো দা। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের রাতে কুণাল সেটি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:৩০
মঙ্গলবার সুপ্রিয়ার সরকার পাড়ার বাড়িতে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়।

মঙ্গলবার সুপ্রিয়ার সরকার পাড়ার বাড়িতে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। প্রতীকী ছবি।

সোমবার উদ্ধার হয়েছিল একটি গেঞ্জি। মঙ্গলবার পাওয়া গেল একটি নীল রঙের চেয়ার ও একটি দা। প্রতিটি জিনিসই নবদ্বীপের সুপ্রিয়া সাহা খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের দাবি।

এই খুনের ঘটনায় ধৃত কুণাল হালদার এবং তার সঙ্গীকে জেরা করে নবদ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কুণাল পুলিশকে জানিয়েছে, সুপ্রিয়া একটি চেয়ারে বসে তার ও তার সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখনই সুযোগ বুঝে পিছন থেকে সুপ্রিয়ার গলা টিপে ধরে কুণাল। পুলিশের জেরায় কুণালের সঙ্গী স্বীকার করেছে যে, পরে সে-ও গলা টিপে ধরেছিল সুপ্রিয়ার।

Advertisement

মঙ্গলবার সুপ্রিয়ার ঘর থেকে নীল রঙের সেই চেয়ারটি ‘সিজ’ করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে একটি ধারালো দা। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের রাতে কুণাল সেটি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল। দা দিয়েই ঘরের আলমারি ভেঙেছিল তারা। খুন করে বেরিয়ে যাওয়ার আগে দা ফ্রিজের তলায় রেখে গিয়েছিল। মঙ্গলবার সেখান থেকেই দা-টি খুঁজে পায় পুলিশ। জলে ফেলা বাকি জিনিসগুলি ডুবুরি নামিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তাঁদের দাবি, কুণাল বলেছে খুনের রাতে সুপ্রিয়ার বাড়ির গেটে তালা দিয়ে রাত ১২টা নাগাদ বেরিয়ে তারা প্রথমে যায় বাড়ির পাশে একটি পুকুরের ধারে। সুপ্রিয়ার বাড়ির গেটের চাবি তারা ওই পুকুরে ফেলেছিল। এর পর সংস্কৃত কলেজের পাশ দিয়ে বুড়োশিব তলা হয়ে তারা পৌঁছে যায় পীরতলায়। সেখানে ‘আগমেশ্বরী গর্ত’ বলে পরিচিত একটা জায়গা আর আরও কয়েকটি এলাকায় তারা নিজেদের জামাকাপড় ফেলেছিল। পুলিশ সেই জায়গা থেকে একটি গেঞ্জি উদ্ধার করেছে। তারা আরও খানিক দূরের লেকের জলে সুপ্রিয়ার মোবাইল ফোন, ছাতা এবং কিছু জামাকাপড় ফেলে বাড়ি চলে যায়।

মঙ্গলবার সুপ্রিয়ার সরকার পাড়ার বাড়িতে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। কুণাল এবং তার সঙ্গীকে নিয়ে পুলিশ মঙ্গলবার বেলা সোয়া এগারোটা নাগাদ সুপ্রিয়ার বাড়ি পৌঁছায়। খুনের রাতে তারা কে কি করেছিল তা অভিনয় করে দেখায়। পুলিশ জানিয়েছে, সবটাই ভিডিও করা হয়েছে।

তদন্তকারীদের কাছে আগেই তারা কবুল করেছিল যে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বৃষ্টির রাতে ৯টা নাগাদ তারা সুপ্রিয়ার বাড়িতে ঢুকেছিল। রাত ১২টা নাগাদ মাস্কে মুখ ঢেকে ছাতা মাথায় দিয়ে তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। ততক্ষণে বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল। সরকার পাড়ার মোড়ে যেখানে সুপ্রিয়ার বাড়ি তার সামনে একটি সিসি ক্যামেরা আছে। সেই ক্যামেরা থেকে নিজেদের আড়াল করতেই তারা ছাতা এবং মাস্ক ব্যবহার করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

জেরায় কুণাল জানিয়েছে, তার সঙ্গীকে চিনতেন না সুপ্রিয়া। ফলে তাকে বাড়ির ভিতরে ঢোকানোর জন্য কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল সে। সুপ্রিয়াকে বলেছিল, সঙ্গীর মোবাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছবি আছে। সেই ছবি দেখানোর নাম করেই সে রাতে দু’জনে সুপ্রিয়ার বাড়ি ঢুকেছিল।

আরও পড়ুন
Advertisement