West Bengal Job Scam

টাকা দিলেই চাকরি, রব ওঠে নবগ্রামে

সিবিআইয়ের তদন্তে এখন পরিষ্কার, সেই চাকরি দুর্নীতির মূল উৎস ছিল নবগ্রামের একটি ডিএলএড কলেজ, যার মালিক চাকরি দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত তাপস মণ্ডল।

Advertisement
বিমান হাজরা
নবগ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১৩
An image of money

—প্রতীকী চিত্র।

টাকা দিলেই চাকরি, গোটা নবগ্রাম জুড়ে রবটা উঠেছিল অনেক আগেই। প্রথম প্রথম বোঝা যেত না, কাকে টাকা দিতে হবে। কিন্তু কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, সেটাও কিছু দিন বাদে জানা হয়ে যায়। দাবি, সে ভাবেই নবগ্রামের বেশ কয়েক জন শিক্ষকতার চাকরি পান টাকার বিনিময়ে।

Advertisement

সিবিআইয়ের তদন্তে এখন পরিষ্কার, সেই চাকরি দুর্নীতির মূল উৎস ছিল নবগ্রামের একটি ডিএলএড কলেজ, যার মালিক চাকরি দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত তাপস মণ্ডল। যে চার প্রাথমিক শিক্ষককে টাকা দিয়ে চাকরি নেওয়ার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই সেই কলেজ থেকেই পাশ করেছেন।সকলেরই চাকরি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। শুধু তাঁরাই নন, নবগ্রামে কান পাতলেই ভেসে উঠছে এখন অনেকের নাম। স্থানীয় সূত্র দাবি, ২০ থেকে ২২ জনের চাকরি হয়েছে এই ভাবেই।

তাপসের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন এমন অনেকেই রয়েছেন নবগ্রামে। যেমন নবগ্রামের জয়কৃষ্ণবাটী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হৃদয় সাহা বলছেন, ‘‘আমি ২০১৭ সালে সৎ ভাবেই চাকরি পেয়েছিলাম। আমি তাপস মণ্ডলকে চিনি। কারণ তাঁর মিনার্ভা প্রতিষ্ঠান থেকেই আমি প্রশিক্ষণ নিয়েছি। তবে চাকরিতে দুর্নীতির প্রসঙ্গে আমি কিছু জানি না।’’ নবগ্রাম ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ যাদব বলছেন, “নবগ্রামে অলিতে-গলিতে শিক্ষকের চাকরি দুর্নীতি নিয়ে জোর চর্চা। এই দুর্নীতির আঁতুড় ঘর নবগ্রামের একাধিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ।’’

ইকরোল কুসুম কামিনী প্রাথমিক স্কুলের প্রতিষ্ঠা ১৯৪২ সালে। ছাত্র সংখ্যা ২০৫। প্রধান শিক্ষিকা বাণী রায় সরকার বলছেন, ‘‘জাহিরুদ্দিনকে বাদ দিলে এখন ৭ জন শিক্ষক।’’ নবগ্রাম থানার পাশেই পূর্ব তিলিপাড়ায় বাড়ি জাহিরুদ্দিনের। আগে বিদ্যুৎ বিভাগে ঠিকাদারি করতেন। সেখান থেকে তাপস মণ্ডলের স্কুলে প্রশিক্ষণ। সেখান থেকেই চাকরি পান বছর ৪০ বয়সের জাহিরুদ্দিন। এর আগেও সিবিআইয়ের ডাক পেয়েছিলেন। টাকা দিয়ে চাকরি নেওয়ার কথা কবুলও করেন।

সিমার ও সাইগার হোসেন, দুই সহোদর ভাই। চাকরি দুর্নীতি কাণ্ডে টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়ায় দু’জনেই এখন জেলে। সিমার বড়। মাঝের জন আসরাফ হোসেন গ্রামেই চাষবাস করেন। সাইগার ছোট। সিমার বিদ্যুৎ দফতরে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন। সিমার চাকরি পান খোঁজারডাঙা প্রাথমিকে। তাঁকে নিয়ে ৬ জন শিক্ষক স্কুলে। ছাত্র শ’দুয়েক। সিমার যে জেল হেফাজতে, সে কথা গ্রামের লোক জানেন। ভাই সাইগর চাকরি পান সিঙ্গার পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক স্কুলে একই সঙ্গে। দু’জনেই তাপস মণ্ডলের কলেজের ছাত্র। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অতনু মার্জিত বলেন, “সাইগরকে নিয়ে ৩ জন শিক্ষক এবং এক জন পার্শ্বশিক্ষক। ছাত্র ৯৭ জন। এখন আমি আর দিদিমণি। কম ছাত্র হলেও ৫টি ক্লাস। সমস্যা তো হবেই।’’

সৌগত মণ্ডলের বিরুদ্ধেও টাকা ঢেলে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ। মাধুনিয়া প্রাথমিক স্কুলে যোগ দেন ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। এক সময় জীবন বিমার এজেন্ট ছিলেন।

আরও পড়ুন
Advertisement