প্রতীকী ছবি।
এবারে ‘দুয়ারে প্রতিষেধক’ চালু করতে চলেছে বহরমপুর পুরসভা। তবে সর্ব সাধারণের জন্য নয়, সত্তোর ঊর্ধ্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য এই পরিষেবা চালু করতে চলেছে। পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে শিবির করে তাঁদের করোনার প্রতিষেধক দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বহরমপুর পুরসভায় এবিষয়ে নাম নথিভুক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। কাল শনিবার পর্যন্ত বহরমপুর পুরসভায় ফোন করে অথবা বহরমপুর পুরসভায় গিয়ে সরাসরি এবিষয়ে নাম নথিভুক্ত করা যাবে। এজন্য সঙ্গে আধার কার্ড থাকা চাই।
বৃহস্পতিবার বহরমপুর পুরসভার প্রশাসক জয়ন্ত প্রামাণিক বলেন, ‘‘এবারে পুরসভার পক্ষ থেকে আমরা দুয়ারে প্রতিষেধক দেওয়ায় উদ্যোগী হয়েছি। দুয়ারে বলতে, বাড়ির কাছাকাছি শিবির করে ৭০ ঊর্ধ্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং প্রতিবন্ধীদের করোনার প্রতিষেধক দেওয়া হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা এবিষয়ে নাম নথিভুক্ত করে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছি। তালিকা তৈরি হলে জেলা প্রশাসনের এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরে সেই তালিকা পাঠানো হবে। শহরে একটি ওয়ার্ডে হয়তো দুটি করে শিবির করা হবে। সেখানে পাড়ার চিহ্নিত লোকজন প্রতিষেধক নিতে পারবেন।’’
ইতিমধ্যে বহরমপুর পুরসভা এবিষয়ে শহর জুড়ে মাইকে ঘোষণা করেছে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন মোড়ের মাথায় এবিষয়ে ব্যানার টাঙিয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে নাম নথিভুক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। কাল শনিবার পর্যন্ত সেই কাজ চলবে। বহরমপুর পুরসভা সূত্রের খবর, ৯৪৩৪২৩৯৮২০/ ৯৪৭৫৮৩৫১৩৬ এই দুটি নম্বরে ফোন করে দুয়ারে প্রতিষেধকের জন্য নাম নথিভুক্ত করাতে পারেন। শুধু ৭০ ঊর্ধ্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং প্রতিবন্ধিদের নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে।
জেলায় করোনা আক্রান্ত ও করোনায় মৃতের শীর্ষে রয়েছে বহরমপুর শহর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েও বেশ কিছু দিন বহরমপুর শহরে দৈনিক ১০০-১৫০জন করোনা আক্রান্ত হচ্ছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও জানান, সুপার স্প্রেডার হিসেবে যাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই সংখ্যা বহরমপুর শহরে বেশি।
বহরমপুরে করোনা সংক্রমণ ও করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। যার জেরে বহরমপুর শহরে চালু থাকা পুলিশ হাসপাতাল, পুরনো হাসপাতাল, পুরসভা চত্বরে থাকা পৌর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনার প্রতিষেধক কেন্দ্রগুলিতে প্রতিদিন ভোর থেকেই প্রতিষেধক নেওয়ার লম্বা লাইন পড়ছে।
আর সেই লাইনে দাঁড়াতে গিয়ে অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থেকে প্রতিবন্ধী সমস্যায় পড়ছেন। তাঁদের অনেকেই ভিড় এড়াতে এখনও প্রতিষেধক কেন্দ্র মুখি হননি। এই পরিস্থিতিতে বহরমপুর পুরসভা তাঁদের জন্য দুয়ারে প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করায় তাঁরা খুশি হয়েছেন।
বহরমপুর পুরসভা প্রাথমিক ভাবে সমীক্ষা করে দেখেছে প্রায় সাড়ে সাতশো জন ৭০ বছরের উপরে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বহরমপুর শহরে বসবাস করেন। ইতিমধ্যে তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিষেধক নিয়েছেন। তবে করোনার প্রতিষেধকের জন্য বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত শহরের দেড়শো জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নাম নথিভুক্ত করেছেন। এছাড়া বেশ কিছু প্রতিবন্ধী প্রতিষেধকের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, এক সময় ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বদের টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতে দৈনিক ৪০০-৫০০জন করে লাইন পড়ছিল। কিন্তু এখন দৈনিক ৫০ জনের আশপাশে প্রতিষেধক নিতে আসছেন।