ফাইল চিত্র।
ভবানীপুরের নির্বাচনী প্রচারের চাপেই কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জের ভোট প্রচার বাতিল করা হল? এমনটাই মনে করছে বিজেপি। যদিও তৃণমূলের দাবি, মমতা যেখানেই সভা করেন সেখানেই ভিড়ের চাপ হয় প্রচণ্ড। কোভিড বিধিতে প্রকাশ্য সভায় এক হাজারের বেশি জমায়েত করা যাবে না। ফলে ভিড় নিয়ন্ত্রণ রাখা যাবে না। এটা চিন্তা করেই মুখ্যমন্ত্রীর শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরের প্রচার সভা বাতিল করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল ঘোষণা করেছিল ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জে প্রচারে আসবেন। সেই মত মাঠ দেখে সভার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু শনিবার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মমতা প্রচারে আসছেন না । তার জায়গায় প্রচারে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও রবিবার জানানো হয় সেটাও অনিশ্চিত।
জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “দলনেত্রী এলে কর্মী ও নেতারা বাড়তি উৎসাহ অবশ্যই পেতেন। তাঁর জায়গায় দুটি কেন্দ্রেই সভা করার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে তারিখ এখনও ঠিক হয় নি। ২০ থেকে ২৩ য়ের মধ্যে আসতে পারেন তিনি।”
জঙ্গিপুরের বিজেপি প্রার্থী ও দলের উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলছেন, “নন্দীগ্রামে প্রমাণ হয়েছে মমতাকেও হারানো যায়। সেই হারার ভয়েই এখন ভবানীপুর ছেড়ে আসতে ঝুঁকি নিচ্ছেন না তিনি। আর অভিষেকও শেষ পর্যন্ত আসতে পারবেন কি না সন্দেহ। কারণ ইডির হাজিরা নিয়ে এখন তিনি কলকাতা-দিল্লি করতে ব্যস্ত।”
তবে মমতা বা অভিষেক আসুন বা না আসুন, ভাল ব্যবধানেই তৃণমূল যে জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জে জিতবে তা নিয়ে নিশ্চিত তৃণমূলের ছোট,বড়, মাঝারি সব নেতা, কর্মীই।
সুতি ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি জাকির অনুগত সিরাজুল ইসলাম বলছেন, “দলনেত্রী মমতা বা অভিষেক যিনিই আসুন কর্মীরা তাতেই উৎসাহ পাবেন। তাতে মার্জিন বাড়বে। আমাদের লক্ষ্য জাকির হোসেনকে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জেতানো। ভেদাভেদ ভুলে যে ভাবে কর্মীরা কাজে নেমেছেন, তাতে দলের সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই বেড়েছে। তাই মার্জিন বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য।”
দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মুক্তি ধর বলেন, “জঙ্গিপুরে ভোটের ফল তো ঠিক হয়েই আছে। বিজেপি ৬৬ হাজার ভোট পেয়েছিল গত লোকসভায়। আমরা নিশ্চিত, তা এ বার অর্ধেকে নেমে আসবে। বামেরা পাবেন বড়জোর হাজার পনেরো। বিরোধী দুই প্রার্থী মিলিয়ে হাজার ৪৫। বাকি ভোট পড়বে জাকিরের ভোট বাক্সে। কাজেই ২লক্ষ ৫৫ হাজার ভোটের মধ্যে জাকিরের এক লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয় কেউ আটকাতে পারবে না।”
এক সময় জাকিরের সঙ্গে সম্পর্কে কিছুটা ফাটল ধরেছিল তৃণমূলের প্রাক্তন মহকুমা সভাপতি বিকাশ নন্দের। এখন তারা এক মঞ্চে। তিনি বলছেন, “এই নির্বাচনকে ঘিরে দলের কর্মীদের জঙ্গিপুরের জেলা সভাপতি যেভাবে সংঘবদ্ধ করেছেন তার প্রভাব পড়বে দু’টি কেন্দ্রেই। দলের মধ্যে গোষ্ঠী বিবাদ বলে এখন কিছু নেই।’’