Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: ‘ইশারা বুঝেও যাইনি, পরে পুলিশ বলল দিদি ডাকছেন’

বৈঠক চলাকালীন ভগবানগোলা বিধানসভার খোঁজ খবর নেন মমতা। সেখানে দুই নেতার কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিশ আলি যাতায়াত করেন কি না?

Advertisement
বিদ্যুৎ মৈত্র
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২৩
বহরমপুর ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বহরমপুর ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

দুই বর্ষীয়ান নেতাকে দলের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহের খানের সঙ্গে সার্কিট হাউসের মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রসদনে বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক শুরুর মুহূর্তেই তাঁদের লোক পাঠিয়ে নিয়ে আসেন আমলা বিধায়কদের সেই বৈঠকে। যেখানে তাঁদের থাকার কথা নয়। দিদির ডাকে একেবারে রাস্তা থেকে বৈঠকে ঢোকার ছাড়পত্রে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি শেখ মহম্মদ ফুরকান ও শুভাশিস রায়। এ দিন শুভাশিস বলেন, “দিদি দেখা মাত্র বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য ইশারা করেছিলেন। কিন্তু আমরা প্রশাসনিক ওই বৈঠকে সঙ্গত কারণেই আমন্ত্রিত ছিলাম না। তাই ইশারা বুঝেও ইতঃস্তত করছিলাম।” সার্কিট হাউস থেকে অনলাইনে দিদির বৈঠক শুনবেন বলে দলের জেলা কার্যালয়ে ফিরে আসেন। ফুরকান বলেন, “সেখান থেকে পরে পুলিশের একটা গাড়ি এসে আমাকে আর শুভাশিসকে বৈঠকে নিয়ে যায়। জানতে চাইলে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের ডাকছেন।”

বৈঠক চলাকালীন ভগবানগোলা বিধানসভার খোঁজ খবর নেন মমতা। সেখানে দুই নেতার কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিশ আলি যাতায়াত করেন কি না? ঘাড় নেড়ে তাঁকে ‘হ্যাঁ’ জানিয়ে দেন তাঁরা। আপাতত অভিমান ঘুচলো দুই পুরনো নেতার।

Advertisement

যতই দলের প্রবীণ সদস্যদের দলে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হোক না কেন তাঁরা আজও ব্রাত্য বলেই খেদ ১৯৯৮ সালে জেলায় দলের প্রতিষ্ঠাতা এই দুই সদস্যের। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যাঁরা টিকিট না পেয়ে প্রায় ঘরবন্দি ছিলেন নির্বাচন কালে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাগির হোসেনও। যিনি ভগবানগোলায় নির্বাচনের দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। নির্বাচনের সময় জেলা সফরে এলেও পুরনো নেতা সাগিরের সঙ্গে দেখা না করে দলনেত্রী চলে যাওয়ায় মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন সাগির। শুভাশিস বলেন “আজ সাগির বেঁচে থাকলে আনন্দ পেতেন। এ দিন দিদিই দলে আমাদের গুরুত্ব বুঝিয়ে গেলেন।”

এ দিকে বুধবার সন্ধ্যার পর বৃহস্পতিবারও দিদির সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ পেতে মরিয়া ছিলেন নেতা, বিধায়করা। সকাল দশটা থেকেই সার্কিট হাউসের প্রবেশ পথের নিরাপত্তা বলয় থেকে অন্তত ৫০ মিটার দূরে ঠাঁয় দাঁড়িয়েছিলেন বড়ঞার নয়া বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। বেশ খানিক পরে লালগোলার বিধায়ক মহম্মদ আলিও সেখানে এসে সঙ্গ দেন জীবনকে। কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের ইশারায় পরে চলে আসেন ব্যারাক স্কোয়ারে। বেলা বারোটা দশে মুখ্যমন্ত্রীর উড়ান ব্যারাক স্কোয়ারের মাটি ছাড়ে। তার আগে ওই দুই বিধায়কের সঙ্গে সেখানে এসে হাজির হন দলের একগুচ্ছ নেতা। ছুটে আসেন মন্ত্রী সুব্রত সাহার সঙ্গে জেলা সভাপতি শাওনী সিংহরায়, আবু তাহের খান, বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, বিধায়ক সাহিনা মমতাজ। পুরসভার মুখ্য উপদেষ্টা নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়, পুরসভার চেয়ারম্যান স্বরূপ সাহার সঙ্গে অশোক দাসও। কিন্তু বাঁশের ব্যারিকেডে তাঁদের সরিয়ে দেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের দিকে হাত নাড়িয়ে উড়ানের দিকে হাঁটতে থাকেন ‘দিদি’।

আরও পড়ুন
Advertisement