Kuli Primary Health Center

চিকিৎসক ছাড়াই চলে কুলি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ক্ষোভ

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কুলি পঞ্চায়েত এলাকার ১৫টি গ্রামের বাসিন্দারা ছাড়াও খোরজুনা পঞ্চায়েতের বহু গ্রাম ওই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল।

Advertisement
কৌশিক সাহা
কুলি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪ ০৮:৩৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

একটা সময় ছিল যখন হাসপাতালে দশটি শয্যার ব্যবস্থা ছিল। সর্বক্ষণের জন্য এক জন চিকিৎসক থাকতেন। থাকতেন নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থেকে সাফাই কর্মী সকলেই। স্বাস্থ্য কর্মীদের থাকার জন্য আবাসনও আছে। কিন্তু এ হেন হাসপাতালে বর্তমানে স্থায়ী কোনও চিকিৎসক নেই।

Advertisement

এক দিকে হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়ক, অন্য দিকে কান্দি-সাঁইথিয়া রাজ্য সড়কের মিলনস্থল কুলি চৌমাথার মোড়ে ওই প্রাথমিক স্থাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থান। তাও কেন ওই হাসপাতালের এমন দশা? বড়ঞা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌভিক দাস বলেন, “রাজ্য জুড়েই চিকিৎসকের অভাব। সেই কারণে কুলির মতো অধিকাংশ হাসপাতালেরই এমন অবস্থা।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কুলি পঞ্চায়েত এলাকার ১৫টি গ্রামের বাসিন্দারা ছাড়াও খোরজুনা পঞ্চায়েতের বহু গ্রাম ওই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। আগে ওই হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা যখন সারাক্ষণ থাকতেন তখন হাসপাতালের রূপ ছিল ভিন্ন। হাসপাতাল চত্বরে সব সময় বহু মানুষের যাতায়াত ছিল। ওই হাসপাতালে সন্তান প্রসব হয়েছে, বহু রোগী হাসপাতালের অন্তর্বিভাগেও একসময় চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে নিয়মিত ভাবে এক জন চিকিৎসকই ওই হাসপাতালের শুধু বহির্বিভাগে চিকিৎসা করেন। সঙ্গে এক জন নার্স, এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী আর এক জন ফার্মাসিস্ট থাকেন। যে দিন চিকিৎসক আসেন না সে দিন ফার্মাসিস্টের উপরে নির্ভর করতে হয় বলেও দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হাসপাতালের আবাসনগুলির এমন অবস্থা যে দরজা-জানলা আর নেই। তাঁদের অভিযোগ, সন্ধের পরে ওই ফাঁকা আবাসনে চলে অসামাজিক কাজ। এ ছাড়াও দিনের বেলায় অলিখিত টোটো স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে হাসপাতাল চত্বর। মাঝেমধ্যে হাসপাতালে পুলিশি নজরদারি চললে কিছুটা কমে অসামাজিক কাজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হাসপাতাল চত্বরে আবর্জনার স্তূপ হয়ে আছে। কত বছর যে আবর্জনা পরিষ্কার হয়নি, সেটা মনে করতে পারছেন না ওই হাসপাতালের এক কর্মী।

স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ হাসানুজ্জামান, জোনায়েত আফজলরা বলেন, “কুলি চৌমাথার মোড় দিয়ে হাজার হাজার যানবাহন যাতায়াত করে। পথ দুর্ঘটনা নিত্য ঘটে চলেছে। কিন্তু তার পরেও কুলি হাসপাতাল কেন এই দশা কাটিয়ে উঠতে পারে না সেটাই বোঝা যায় না।” ওই এলাকায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটলে জখমদের নিয়ে আট কিলোমিটার দূরে কান্দি মহকুমা হাসপাতাল অথবা বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।

বড়ঞার বিধায়ক তৃণমূলের জীবনকৃষ্ণ সাহা বলেন, “ওই হাসপাতালে গুরুত্ব দেখে আমি গোটা বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরের কাছে জানিয়েছি, আবারও জানাব। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।”

যদিও ওই হাসপাতাল শুধু নয়, জেলা জুড়েই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির মান উন্নয়নের হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে
দাবি করে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌভিক দাস বলেন, “কুলি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়ন করার প্রয়োজনীয়তা কতখানি, সেটা জানিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement