প্রতীকী ছবি।
আলুর দাম লাগাম ছাড়া হওয়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া ব্যবস্থা নিল রাজ্য সরকার। স্টোরে মজুত আলু বাজারে যোগান না-দিয়ে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে দাম চড়িয়ে আলুতে ফাটকা মুনাফা লোটার পরিস্থিতি তৈরি হতেই জারি হল স্টোরে মজুত আলু ফাঁকা করার নির্দেশ। রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের তরফে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সব হিমঘরে মজুত আলু ফাঁকা করে ফেলতে হবে। এই বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই আলুর ঊর্দ্ধমুখী দর থমকে গিয়েছে খুচরো বাজারে।
আনাজের চড়া বাজারে কিছুটা নাগালের মধ্যে ছিল আলু। কিন্তু হঠাৎ করেই অক্টোবরের শেষদিকে হু-হু করে বাড়তে শুরু করে আলুর দাম। ১০-১৫ টাকা কেজির আলু প্রায় রাতারাতি বাড়তে শুরু করে। জ্যোতি আলু পৌঁছে যায় ২০ টাকায়, হেমাঙ্গিনী ২০ টাকায়। চন্দ্রমুখী আলুর দাম ২৫ টাকা ছুঁয়ে ফেলতেই শোরগোল পড়ে যায়। খুচরো আলু বিক্রেতারা জানান আড়তে ৭৫০ টাকার আলুর বস্তা কিছু বোঝার আগেই ৯৫০ টাকা হয়ে যায় এবং মহাজনের জানিয়ে দেন দাম নাকি বাড়তেই থাকবে।
আলু ব্যবসায়ীরা পাশাপাশি আরও জানিয়ে ছিলেন, বৃষ্টির জন্য চাষের মরশুম পিছিয়ে গিয়েছে এ বার। অন্যবারে শীতকালে বাজারে নতুন যে আলু আসে তা আবহাওয়ার কারণে সবে বোনা শেষ করেছেন চাষিরা। তাতেই সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়। অন্য দিকে উৎসবের সময় আলুর প্রবল চাহিদা থাকার সুযোগ নিতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন এক শ্রেণির মজুতদার।
সাধারণত অক্টোবরের শেষ থেকে শুরু হয়ে নভেম্বর জুড়ে এ রাজ্যে পোখরাজ আলুর চাষ হয়। যা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে বাজারে চলে আসে। আলু ব্যবসায়ী প্রসূন দাসের বক্তব্য বলেন, “আলুর এই দাম বৃদ্ধিতে চাষির কোনও ভুমিকা ছিল না। দাম নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বড় ব্যবসায়ীরা, যাঁরা স্টোরে আলু মজুত রাখেন।”
এই অবস্থায় ময়দানে নামে রাজ্য সরকার। সরকারি কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে স্টোর ফাঁকা করতে হবে। সুতরাং ইচ্ছে করলেও আর আলু ধরে রাখা যাবে না। ফলে বাজার আর চড়বে না। এই সময়ে তুলনায় যোগান কম আসছিল তাই দাম চড়ছিল।” নবদ্বীপের এক খুচরো আলু বিক্রেতা অনিমেষ দে বলেন, “যা খবর পাচ্ছি আলুর দাম আর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা নেই। বরং এ বার কমতির দিকেই যাবে আলু।”