Murder

প্রেমিককে ডেকে এনে গুলি করে খুন! নদিয়ায় প্রৌঢ় হত্যার কিনারা প্রেমিকা ধরা পড়তেই

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভরসন্ধ্যায় নদিয়ার চাকদা থানা এলাকার মদনপুর রেলগেট সংলগ্ন এলাকা থেকে রাস্তার ধারে মিলেছিল গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তির দেহ। ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল চাকদহের মদনপুরে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চাকদহ শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০৫

—প্রতীকী ছবি।

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে প্রেমিকা বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় ‘ব্ল্যাকমেল’ করছিলেন প্রেমিক। এই পরিস্থিতিতে দেখা করার কথা বলে তাঁকে ডেকে এনে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল তরুণীর বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনি সন্দেহে এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম পারুল খাতুন। তদন্তকারীদের দাবি, আকলাখকে খুনের কথা জেরায় স্বীকার করেছেন পারুল।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভরসন্ধ্যায় নদিয়ার চাকদা থানা এলাকার মদনপুর রেলগেট সংলগ্ন এলাকা থেকে রাস্তার ধারে মিলেছিল গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তির দেহ। ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল চাকদহের মদনপুরে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করলেও প্রাথমিক ভাবে নাম পরিচয় কিছুই জানা যায়নি। পরে দেহ শনাক্ত হয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মৃতের নাম আকলাখ আলম (৪৫)। তিনি ঝাড়খণ্ডের কাপালি থানার আমজাদ বস্তির বাসিন্দা। তাঁর সম্পর্কে আরও খোঁজখবর করে রবিবার রাতে রাউতারি গ্রাম পঞ্চায়েতের যাত্রাপুর থেকে পারুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তদন্তকারীদের দাবি, পুলিশকে পারুল জানান, শিমুরালির পাওয়ার গ্রিড এলাকায় কাজ করতেন আকলাখ। ভাড়া থাকতেন তরুণীরই বাড়িতে। সেই সময়েই তাঁদের মধ্যে প্রেম হয়। কয়েক দিন আগেই আকলাখ বাড়ি ছেড়ে দেন। তার পরেও তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। মাঝমধ্যে দেখাও হত দু’জনের। এর মধ্যেই পরিবারের লোক পারুলের বিয়ে ঠিক করে অন্যত্র। সামনের মাসেই তাঁর বিয়ে। কিন্তু আকলাখ কিছুতেই তাঁকে সম্পর্ক ছেড়ে বেরোতে দিচ্ছিলেন না। এর পরেই শনিবার প্রেমিককে মদনপুরে ডেকে এনে খুন করেন তরুণী। রাতে দু’জনে মদনপুর গাঙ্গুলিপাড়ায় মাঙ্গলিক ক্লাবের পিছনের রাস্তায় মিনিট দশেক গল্প করেন। তার পরেই ব্যাগ থেকে বন্দুক বার করে আকলাখকে গুলি করে বাইক নিয়ে পালিয়ে যান। তরুণীই জানান, আকলাখকে গুলি করে খুন করতে দেখে ফেলেছিলেন এক মহিলা।

পুলিশ সূত্রেই খবর, তরুণী জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে আকলাখের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ঝাড়খণ্ডে গিয়ে মাস দুয়েক সংসারও করেন। সেখানে গিয়েই তিনি জানতে পারেন, আকলাখের স্ত্রী ও চার সন্তান রয়েছে। এর পর আবার নদিয়ায় ফিরে আসেন পারুল। তদন্তকারীদের দাবি, তরুণী স্বীকার করেছেন, কয়েক দিন ধরে আকলাখ তাঁকে টাকাপয়সা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ দিকে ক্রমাগত চাপও দিচ্ছিলেন সম্পর্ক রাখার জন্য। ব্ল্যাকমেল করছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই খুনের পরিকল্পনা করেন।

রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার সানি রাজ বলেন, ‘‘প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সন্দেহভাজন এক তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। মৃত ব্যক্তির কল লিস্টের তথ্য ঘেঁটে তরুণী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য মেলে। জেরায় ওই তরুণী খুনের কথা স্বীকার করেছেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন বলে দাবি করেছেন তরুণী। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র কোথা থেকে তরুণীর হাতে এসেছিল, আর তাঁকে কে সাহায্য করেছিলেন, তা-ও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।’’

আরও পড়ুন
Advertisement