fake doctor

ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর নালিশ, গ্রেফতার ‘চিকিৎসক’

বাড়ি ফিরে ওই ‘চিকিৎসকে’র বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে সুতি থানার পুলিশ তাঁকে ধরতে হন্যে হয়ে তল্লাশি শুরু করে। কিন্তু গা ঢাকা দেয় ওই ভুয়ো চিকিৎসক।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৫
গ্রেফতার চিকিৎসক।

গ্রেফতার চিকিৎসক। — ফাইল চিত্র।

ভুল চিকিৎসায় এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় গা ঢাকা দেওয়া এক ভুয়ো চিকিতসককে দীর্ঘ ৮ মাস পর শমসেরগঞ্জের এক গ্রাম থেকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করল সুতি থানার পুলিশ। তার নাম আব্দুল মালেক। বাড়ি বীরভূমের পাইকর থানার কলহপুর গ্রামে। তেলেঙ্গনা রাজ্যের এক চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে প্যাড ছাপিয়ে সুতির ছাবঘাটির খাঁপুর ও খিদিরপুর গ্রামে দু’টি ওষুধের দোকানে চেম্বার খুলে দীর্ঘদিন ধরে ‘চিকিৎসা’ করে যাচ্ছিল ওই ব্যক্তি। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা এমএসসি নার্সিং পড়ুয়া শ্রাবণী খাতুন নামে এক তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ‘চিকিৎসা’ করছিলেন তিনি। প্রায় ৬-৭ মাস ‘চিকিৎসা’র পরও অবস্থার অবনতি হতে থাকলে শ্রাবণীকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।

সুতির ‘চিকিৎসক’ আব্দুল মালেকের প্রেসক্রিপসন দেখে সন্দেহ হওয়ায় সেখানকার বহির্বিভাগের চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ধরা পরে ভুল চিকিৎসা চলছে ওই তরুণীর।তার বাবা রাজীব শেখ পেশায় টোটো চালক। তিনি বলেন, “বহু চেষ্টা করেও শয্যা না থাকায় মেয়েকে সেখানে ভর্তি করতে না পেরে বহরমপুরে এক হাসপাতালে ভর্তি করি মেয়েকে। সেখানকার চিকিৎসকরাও প্রেসক্রিপসন দেখে জানিয়ে দেন ওই চিকিৎসক ভুয়ো এবং তার দেওয়া ভুল ওষুধের ফলেই তরুণীর জীবনাশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভর্তির ৪ দিনের মাথায় হাসপাতালেই মৃত্যু হয় মেয়ের।”

Advertisement

এরপরেই বাড়ি ফিরে ওই ‘চিকিৎসকে’র বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে সুতি থানার পুলিশ তাঁকে ধরতে হন্যে হয়ে তল্লাশি শুরু করে। কিন্তু গা ঢাকা দেয় ওই ভুয়ো চিকিৎসক। তার খোঁজে বীরভূমেও যায় পুলিশ। সেখানেই জানতে পারে শমসেরগঞ্জের এক গ্রামে নতুন ভাবে চেম্বার খুলে ‘চিকিৎসা’ শুরু করেছেন। এরপরই বুধবার রাতে শমসেরগঞ্জে একটি ওষুধের দোকানে তাঁর ‘ডাক্তারখানায়’ হানা দিয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। যদিও ওই ধৃতের দাবি, সে বায়োকেমিক চিকিৎসা নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃত ভুয়ো চিকিৎসককে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ধৃত ওই ব্যক্তি তেলেঙ্গনা রাজ্যের এক চিকিৎসকের একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় চেম্বার করে রোগীদের চিকিতসা করছেন। কিন্তু আদৌ তিনি কোনও চিকিৎসকই নন। সেই কারণেই ভুল চিকিৎসায় ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪২০, ৪৬৭, ৪৭১, ৩০৪এ এবং ১৫ মেডিক্যাল কাউন্সিলিং আইন ১৯৫৬ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আদালত এদিন তাকে ৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement