ফাইল চিত্র।
মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সঙ্কটে পড়়েছেন বিজেপিতে ইতিমধ্যে তাঁর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা নেতা-কর্মীরা। তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান এখন কী হওয়া উচিৎ তা নিয়ে কার্যত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন তাঁরা। বিজেপিতেই থেকে যাওয়া ঠিক হবে নাকি মুকুল রায়ের রাত ধরে তৃণমূলে যাওয়াটা উচিৎ, এঁদের অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না। আবার তৃণমূলে যেতে চাইলেও তাঁদের নেওয়া হবে কিনা, সেটাও স্পষ্ট নয়। এ দিকে, মুকুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে বিজেপির অন্দরেও তাঁরা অনেকের চক্ষুশূল হয়ে পড়েছেন।
কিছু কিছু নেতা আবার তৃণমূলে বিশেষ ‘কল্কে না পেয়ে’ মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু বিজেপিতেও তাঁদের বিশেষ জায়গা হয়নি। এই নেতারা অবশ্য ফিরতে চাইছেন তৃণমূলে। এঁদেরই এক জন কৃষ্ণনগর শহরের কেষ্ট পাল। তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য ছিলেন। লোকসভা ভোটের আগে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু বিজেপি তাঁকে কোনওদিন সে ভাবে গুরুত্ব দেয়নি। সেই কেষ্ট পাল এখন বলছেন, “মুকুলদা যেখানে আমিও সেখানে। আমিও তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তবে সকলে এখনই এমন সিদ্ধান্ত নেননি। তাঁরা জল মাপছেন। নির্বাচনের সময় মুকুলের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “আগে দেখি মুকুলদা নিজে তৃণমূলে কতটা গুরুত্ব পান। বিজেপিতে তবু আমার একটা পদ আছে। তৃণমূলে যদি কিছু না পাই তখন? আমও যাবে ছালাও যাবে।”
নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগর-দক্ষিণ কেন্দ্রের ভাতজাংলা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচ তৃণমূল সদস্য। এঁদের অন্যতম কৌশিক ঘোষ বলেন, “আমরা এই বিষয়ে এখনই কিছু ভাবছি না।”
নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে বিজেপির যাঁরা মুকুল রায়ের কাছাকাছি এসেছেন তাঁদের অন্যতম অরূপ দাস। এক সময়ে সিপিএমের এই দাপুটে নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়ে বিশেষ কিছু করে ওঠতে পারেননি। মুকুল রায় প্রার্থী হওয়ার পর তাঁকে ইলেকশন এজেন্ট করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, “মুকুলদার সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়ছে। আমি এখনও আমার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঠিক করে উঠতে পারিনি।” তবে ভোট করতে গিয়ে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলেও দল বদল নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন না বলে দাবি করেছেন বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৈকত সরকার। তিনি বলেন, “মুকুলদার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠলেও বিজেপি ছাড়ার কথা ভাবতেও পারি না।”