Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: মুখমন্ত্রীর সফরেও জট কাটল না বহু সমস্যার

নোকারি এলাকার ফুল চাষিদেরও আশা পূরণ হল না। এখানে ফুল সংরক্ষণের তেমন পরিকাঠামো নেই। হিমঘরটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ।

Advertisement
সুস্মিত হালদার 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:১০
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

জেলায় এমন কিছু সমস্যা আছে যার দ্রুত সমাধান জরুরি। অনেকেই ভেবেছিলেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে সেই সব সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু এ বারও সেই সব সমস্যা ঠাঁই পেল না প্রশাসনিক বৈঠকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় শান্তিপুর-স্বরূপগঞ্জ ভায়া কৃষ্ণনগর ন্যারো গেজ রেল লাইনকে ব্রড গেজ করার কাজ শুরু হয়েছিল। ভাগীরথী নদী পার হয়ে নবদ্বীপ ধাম থেকে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি করার কথা ওই লাইনের। কিন্তু জমি জটের কারণে আমঘাটা পর্যন্ত হয়ে কাজ থমকে আছে। ভাগীরথী নদীর উপরে তৈরি হয়ে আছে বিশাল রেল সেতু। কিন্তু ওই পর্যন্তই। বিজেপির জগন্নাথ সরকার রানাঘাটের সাংসদ হওয়ার পর এই রেললাইনের কাজ আবার নতুন করে শুরু করার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন। কয়েক মাস আগে ওই এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা। তারা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার জমি দিলেই তারা কাজ শুরু করে দিতে পারবেন।

Advertisement

অনেকেই মনে করেছিলেন এ বারের প্রশাসনিক বৈঠকে সেই জমির স্থায়ী সমাধানের কথা বলে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তোলেনইনি। ফলে হতাশ জেলার বহু মানুষ। নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স, ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড ট্রেডের যুগ্ম সম্পাদক গোকুলকৃষ্ণ সাহা বলছেন, “ওই লাইনটা চালু হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। তাতে যাত্রীদের যেমন সুবিধা হত তেমনই উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হলে পণ্য পরিবহনের খরচও অনেকটাই কমে যেত। আশা করছি, বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।”

হতাশ হয়েছেন কৃষ্ণনাগরিকদেরও একটা অংশও। কারণ, এই শহরের অন্যতম সমস্যা বেলেডাঙা রেল গেট। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় রেল গেট হওয়ায় মানুষের চরম ভোগান্তি হয়। আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। শহরের মানুষের অনেক দিনের দাবি ছিল, রেলগেটের উপর একটা ওভারব্রিজের। রেলের কর্তারা বারেবারে বলে গিয়েছেন, রাজ্য জমি দিলেই তারা ওভারব্রিজ তৈরি করে দেবেন। শহরের মানুষ আশা করছিলেন যে, এ বার মুখ্যমন্ত্রী এই জমি সমস্যার সমাধান করে দিয়ে যাবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

একই ভাবে জলঙ্গি নদীর উপরে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের সংযোগকারী করিমপুর-বক্সিপুর সেতুর কাজ দীর্ঘ দিন ধরে অসম্পুর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সেই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় করিমপুরের মানুষও হতাশ। নোকারি এলাকার ফুল চাষিদেরও আশা পূরণ হল না। এখানে ফুল সংরক্ষণের তেমন পরিকাঠামো নেই। হিমঘরটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ। ফুল নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে চাষিরা কম দামে ফুল বিক্রি করতে বাধ্য হন। কিন্তু হিমঘর নিয়ে কোনও কথাই হল না প্রশাসনিক বৈঠকে। পুরভোটের মুখে এই অপ্রাপ্তিগুলিকে সামনে রেখে আক্রমন শানাতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলছেন, “নামেই প্রশাসনিক বৈঠক। আসলে মুখ্যমন্ত্রী সরকারি খরচে দলের বৈঠক করে গেলেন। এক লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প দেখিয়ে জেলার মানুষকে বাকি সব উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করে গেলেন।’’ যদিও এর পাল্টা তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহা বলছেন, “নদিয়াকে মুখ্যমন্ত্রী ঢেলে দিয়েছেন। জেলার সর্বত্র উন্নয়নের ছাপ আছে। প্রকল্প গুলোর কাজ দ্রুত শেষ করাই এখন প্রধান লক্ষ্য।”

আরও পড়ুন
Advertisement