প্রতীকী ছবি।
দ্বিতীয় ঢেউয়ে মুর্শিদাবাদেও দৈনিক আড়াই থেকে তিন হাজার জন অ্যাক্টিভ করোনা রোগী থাকছিল। কিন্তু কড়া বিধি নিষেধ ও করোনা সুরক্ষা বেধে মেনে চলা, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা কারণে সেই সংখ্যা নেমে এখন দেড়শো জনের কাছাকাছি। কম অ্যাক্টিভ রোগীর নিরিখে মুর্শিদাবাদ রাজ্যের শীর্ষে রয়েছে। সব থেকে কম অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছে পুরুলিয়ায়, তার পরে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। রাজ্য সরকার জেলায় জেলায় কন্টেনমেন্ট বা মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োনের কথা বললেও সংক্রমণের হার কম ও অ্যাক্টিভ রোগী কম থাকায় সে পথে বেশি এগোতে হয়নি। জেলায় শুধুমাত্র দুটি মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন করতে হয়েছে। একটি কান্দির গোকর্ণে এবং অপরটি বেলডাঙা ২ব্লকে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘জেলায় সংক্রমণের হার কম এবং অ্যাক্টিভ রোগীও কমেছে। সব কিছু খতিয়ে দেখে বেলডাঙা ও কান্দিতে একটি করে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।’’
জেলায় স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল করোনা রোগীর সংখ্যা দৈনিক ৭০০জন করে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। দৈনিক আড়াই থেকে তিন হাজার করে অ্যাক্টিভ করোনা রোগী থাকছিল। পরে পরে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নামতে থাকে। এখন দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ জনের নীচে নেমে গিয়েছে। এছাড়া অ্যাক্টিভ করোনা রোগী দেড়শো জনের আশপাশে ঘোরা ফেরা করছে। যার জেরে স্বস্তিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, ‘‘রাজ্যের অন্য জেলার তুলনায় মুর্শিদাবাদে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। সংক্রমণের হার অনেক নিচে নেমে গিয়েছে। অ্যাক্টিভ রোগীও জেলা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকছে। কন্টেনমেন্ট জ়োন করার ক্ষেত্রে যেমন অ্যাক্টিভ করোনা রোগী থাকার কথা তেমনটা আমাদের জেলায় নেই। জেলা জুড়ে ২৬টি ব্লক ও ৮টি পুর এলাকায় মাত্র দেড়শো জন করোনা অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছে। ফলে কন্টেনমেন্ট জ়োন করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ফলে প্রশাসন সেদিকে না হেটে দুটি জায়গায় মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।’’
করোনা সংক্রমণ রুখতে গত সোমবার বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে গত মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী কন্টেনমেন্ট জ়োন, মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োনের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন দুটি জায়গাকে চিহ্নিত করে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করেছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ওই দুটি এলাকায় করোনার বিধিনিষেধ জারি করার পাশাপাশি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। তবুও আমরা ঝুঁকি নিচ্ছি না। তাই যেখানে একটি বাড়িতে বা পিঠোপিঠি দুটি বাড়িতে দুজনের অধিক আক্রান্ত সেখানে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূ্ত্রের খবর, মাইক্রো কন্টেন্টমেন্ট জ়োনে থাকা করোনা আক্রান্তের পরিবারের লোকজন অন্যর সঙ্গে মেলামেশা না করেন, ওই এলাকার লোকজন অপ্রয়োজন ঘর থেকে না বেরোন সে বিষয়ে নজরদারি রাখা হচ্ছে। নিয়মিত জেলা জুড়ে খতিয়ে দেখা হবে।