প্রতীকী ছবি।
করোনার প্রথম ঢেউয়ে রাজ্যে দু’একজন করোনা আক্রান্ত শিশুর খোঁজ মিললেও সে বার মুর্শিদাবাদের শিশুরা নিরাপদে ছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সে বার জেলায় কোনও শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়নি। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতেই জেলায় শিশুরাও আক্রান্ত হতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, দ্বিতীয় ঢেউয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৫ জন শিশু করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। তাদের করোনা নেগেটিভ হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা সু্স্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এছাড়া ৭ জন শিশুর করোনা পজ়িটিভ হয়ে এসএনসিইউতে ভর্তি হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বাকি দু’জনও আগের থেকে ভাল আছে। শীঘ্রই তারাও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি অমিয়কুমার বেরা বলেন, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছু শিশু মুর্শিদাবাদে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এছাড়া এখানে জন্মের পরেই আক্রান্ত হওয়ার নজির রয়েছে। তবে তাদের সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেছেন শিশুরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত কোনও শিশুর মৃত্যু হয়নি। করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ থাকা শিশুরা প্রত্যেকেই সু্স্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের উপর প্রভাব পড়তে পারে ধরে নিয়ে আমরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯৯ জনের। তাঁদের মধ্যে ৬ বছর বয়সি একজন, ১৪ বছর বয়সি একজন, ১৫ বছর বয়সি একজন এবং ১৮ বছর বয়সি চারজন রয়েছে। বাকি মৃতদের বয়স ক্রমশ উর্ধমুখি। ৬, ১৪ ও ১৫ বছর বয়সিরা কলকাতার হাসপাতালে মারা গিয়েছে। ১৮ বছর বয়সি মৃত চার জনের মধ্যে একজন বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে এবং তিন জন কলকাতার হাসপাতালে মারা গিয়েছে। এই তথ্য বলে দিচ্ছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনায় কোনও শিশুর মৃত্যু হয়নি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে যুবকদের পাশাপাশি বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুর হারও বেশি ছিল। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে যুবকদের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, ২০-৪০ বছর বয়সিরা জেলায় সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে এবারে শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে। আর সেই ঢেউয়ে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। ফলে দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংখ্যায় কম আক্রান্ত হলেও তৃতীয় ঢেউয়ের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, করোনায় শিশুদের মৃত্যু হতেও পারে। সে সব মাথায় রেখে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।