প্রতীকী ছবি।
জেলায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে কয়েকটি জায়গা বেছে নিল জেলা প্রশাসন। আজ, শুক্রবার থেকে সেই সব জায়গায় বিধিনিষেধ কড়া ভাবে বলবৎ হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এর কয়েকটি জায়গায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে কর্তাদের দাবি। পরিস্থিতি অনুযায়ী আগামী দিনে কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা বাড়ানো-কমানো হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
নদিয়া জেলায় বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। মাস দুয়েক আগে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা হাজার ছুঁয়েছিল। সেই সংখ্যা ক্রমশ কমতে কমতে বৃহস্পতিবার ৫৯ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, আগামী দিনে সংখ্যাটা আরও কমতে পারে। চলতি মাসের শেষের দিকে পরিস্থিতি আপাত ভাবে প্রায় স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তা সম্ভব যদি সংক্রমণ কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তবেই।
দক্ষিণের কয়েকটি জেলার তুলনায় সংক্রমণ কম হওয়ায় নদিয়ায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যাও তুলনায় কম। তবে তারই মধ্যে যে সমস্ত এলাকায় বর্তমানে সংক্রমিতের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি সেই এলাকাগুলি চিহ্নিত করে ছোট ছোট জায়গা ধরে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর ১-এর পাশাপাশি রানাঘাট ১ ও ২ ব্লক এবং চাকদহ ও কল্যাণী ব্লকের কয়েকটি গ্রামের কিছুটা করে অংশ বা পাড়াকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের দোগাছি, গোয়ালদহ, যাত্রাপুর গ্রামের আংশিক, রানাঘাট ২ ব্লকের দেবগ্রাম পঞ্চায়েতের গোপীনগরের কিছুটা, রানাঘাট ১ ব্লকের হবিবপুর পঞ্চায়েতের মুসলিমপাড়ার একাংশ, কল্যাণী ব্লকের সগুনা পঞ্চায়েতের বসন্তপুর গ্রামের কিছু অংশ ছাড়াও চাকদহ ব্লকের তাতলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের লালপুর, কমলপুর ও পুংলিয়া গ্রামের কিছুটা অংশকে আপাতত কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশেষ কী কড়াকড়ি থাকছে এই সব এলাকায়?
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকায় পারস্পরিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। যে সমস্ত পাড়া বা এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে, সেই সমস্ত এলাকায় ঢোকার রাস্তায় বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হচ্ছে। এই এলাকায় যাতে কেউ ঢুকতে বা বেরোতে না পারে তার জন্য পুলিশি নজরদারি চালানো হবে। কিন্তু যাঁরা এই সব কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে বসবাস করবেন তাঁরা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাবেন কী করে? খাবার, জল, ওষুধ থেকে শুরু করে শিশুদের জন্য দুধ পাওয়া যাবে কী ভাবে?
জেলা প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, যেহেতু ছোট ছোট এলাকা ধরে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হচ্ছে, সেই কারণে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেতে খুব সমস্যা হওয়ার কথা না। তবু যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় তার জন্য স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারাই দরকার মত প্রয়োজনীয় সামগ্রী কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। জেলার সংক্রমণের তথ্য রোজ পর্যালোচনা হবে। যদি দেখা যায়, নতুন কোনও এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে, সেই এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হবে।