Krishnanagar Clash

বিসর্জনে সংঘর্ষ, হাসপাতালে দুই

একাধিক বার প্রাণহানিও হয়েছে। জগদ্ধাত্রী প্রতিমার ভাসানের পাশাপাশি কালী ও সরস্বতী প্রতিমার ভাসান নিয়েও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫৫
বিসর্জনের রাতে গোলমাল। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ১৩ অক্টোবর ২০২৪।

বিসর্জনের রাতে গোলমাল। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ১৩ অক্টোবর ২০২৪। ছবি : সংগৃহীত।

দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় দুই দলের অশান্তির জেরে গুরুতর জখম হয়েছেন দু’জন। তাঁদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত দু’জনই বহিরাগত। দু’জনেই চাপড়ার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। কার্নিভালের আগের দিন রাতে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে প্রশাসন। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

কৃষ্ণনগর শহরে প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় অশান্তি-রক্তপাত নতুন নয়। একাধিক বার প্রাণহানিও হয়েছে। জগদ্ধাত্রী প্রতিমার ভাসানের পাশাপাশি কালী ও সরস্বতী প্রতিমার ভাসান নিয়েও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। তবে দুর্গা প্রতিমা ভাসানে শেষ কবে রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছে তা মনে করতে পারছেন না কৃষ্ণনাগরিকরা।

রবিবার রাতে শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটি প্রতিমা বিসর্জন করে। মাঝরাতের দিকে একেবারে শেষ প্রতিমা বিসর্জনের সময়ই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাধানগর এলাকার একটি বারোয়ারির প্রচুর সদস্য প্রতিমা নিয়ে কদমতলা ঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন। প্রতিমার সঙ্গে ছুটতে ছুটতে যাওয়ার সময় চ্যালেঞ্জ মোড় এলাকায় তাঁদের উপর চড়াও হয় বেশ কিছু যুবক। তারা অনেক আগে থেকে বাঁশ-লাঠি নিয়ে প্রস্তুত হয়ে ছিল। শোভাযাত্রার লোকজনকে তারা এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে বারোয়ারির সদস্যেরাও পাল্টা মারতে শুরু করেন। গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের আকার নেয়। প্রাণভয়ে দর্শনার্থীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। এরই মধ্যে দুই যুবককে রাস্তার উপর ফেলে লাঠি-বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়। এক জনকে মুগুর দিয়ে আঘাত করতেও দেখা যায়। বেশ কিছু সময় পর পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে এলাকা ফাঁকা করে দেয়।

এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শহরের মানুষ। তাঁদের প্রথম প্রশ্ন, প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চ্যালেঞ্জ মোড় এলাকায় অত জন যুবকের বাঁশ-লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কথা পুলিশ কেন জানতে পারল না? জানতে পেরে থাকলে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হল না কেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন, দীর্ঘ সময় ধরে যে তান্ডব চলে, সেই সময় পুলিশ কোথায় ছিল? কেন ঢিল ছোড়া দূরত্বে থানা থেকে পুলিশ বাহিনী আসতে এত সময় লাগল? তৃতীয় প্রশ্ন, ঘটনাস্থলে যে সমস্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিলেন তাঁদের কেন নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা গেল? চোখের সামনে বাঁশপেটা করতে দেখেও তাঁরা আটকাতে গেলেন না কেন? শহরের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, তা হলে কি প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় নিরাপত্তার সংক্রান্ত বিষয়ে যতটা গুরুত্ব দেওয়ার উচিৎ ছিল ততটা দেওয়া হয়নি? দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রায় যদি এই হয় তা হলে অনেক বড় মাপের জগদ্ধাত্রী ও কালী পুজোয় কী হতে পারে, তা নিয়ে শঙ্কিত শহরের মানুষ।

যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, দুই পক্ষের লোকজনই মত্ত অবস্থায় ছিল। জমায়েতের খবর পেয়ে পুলিশ চ্যালেঞ্জের মোড়ে গিয়ে লাঠি হাতে যুবকদের হটিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তারা গলির মধ্যে লুকিয়ে ছিল। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে-র দাবি, “পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছিল। গন্ডগোল শুরু হলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। গোলমাল বাধার সঙ্গে সঙ্গেই কোতোয়ালি থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।”

আরও পড়ুন
Advertisement