প্রতীকী ছবি।
একের পর এক ভাঙন বিজেপিতে। নির্বাচনের মুখে শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা এলাকায় দফায় দফায় মণ্ডল ও বুথ পর্যায়ের কয়েকশো নেতা ও কর্মী গত এক সপ্তাহ ধরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় দুই কেন্দ্রেই যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। একটি মাত্র পঞ্চায়েত ছিল বিজেপির দখলে জঙ্গিপুরে। সেই আহিরণ গ্রাম পঞ্চায়েতও গত এক মাসের মধ্যে দলবদলের ফলে দখল করে নিয়েছে তৃণমূল।
জঙ্গিপুরে বিজেপির নির্বাচনের সহ প্রমূখ রাজু দত্ত দলে এই ভাঙনের জন্য যোগ্য নেতৃত্বের অভাবকে দায়ী করছেন। তার মতে, “বুথ স্তরের কর্মীদের সম্মান না দেওয়ার ফলেই দল ছাড়ার এই হিড়িক।” যদিও বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাসের দাবি, ‘‘কয়েক জন নেতা দলত্যাগ করেছেন। কর্মীরা দলেই আছেন। কাজেই নির্বাচনের মুখে এই দলত্যাগে বিজেপির ভোট বাক্সে তেমন কোনও প্রভাব ফেলবে না।’’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জঙ্গিপুর থেকে ৬৬ হাজার ভোট পেয়েছিল। এ ছাড়াও বিজেপির অন্তত ২৫ হাজার ভোট টেনে নিয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী, বিশেষত শহরাঞ্চলে। শমসেরগঞ্জে বিজেপি পেয়েছিল ২
৯ হাজার ভোট। দুটি কেন্দ্রেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। দুই কেন্দ্রেই বিজেপি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর তেমন কোনও থাবা বসাতে পারেনি। স্বভাবতই ভোটের অঙ্কে বিজেপি এমনিতেই জঙ্গিপুরে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।
তার উপর নির্বাচনের দু’সপ্তাহ আগে বিজেপি থেকে দলবদলের হিড়িক। সব চেয়ে বেশি বিজেপিতে ভাঙন ধরেছে সুতির আহিরণ ও বংশবাটী পঞ্চায়েতে। জঙ্গিপুর বিধানসভার মধ্যে পড়ে এই দুই পঞ্চায়েত। ১৭ সদস্যের পঞ্চায়েতে ১৪ জনই এখন তৃণমূলের। প্রধান, উপপ্রধান দল ছেড়েছেন সকলেই। দল ছেড়েছেন জেলার যুব সহ সভাপতি তাপস রায়ও। কানুপুর, জামুয়ার ও রঘুনাথগঞ্জ শহরেও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অনেকেই।
একই অবস্থা শমসেরগঞ্জেও। সেখানে এমনিতেই দুর্বল সংগঠন বিজেপির। তার উপর দু’দিন আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন নিমতিতার মণ্ডল সভাপতি রঞ্জিত দাস ও যুব সভাপতি সন্দীপ সিংহ। বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলছেন, “লড়াই কঠিন ঠিকই। কিন্তু কয়েক জনকে দলবদল করিয়ে বিজেপির ভোটে ভাগ বসাতে পারবে না তৃণমূল। আমাদের সেরকম ক্ষতি হবে না। যারা গেছে তারা নিজেদের স্বার্থে গেছে। বরং স্থানীয় মানুষ তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে।” রাজু দত্ত কিন্তু সরাসরি এই ভাঙনের জন্য দলের নেতাদেরই দায়ী করে বলছেন, “বিজেপির এই ভাঙনের জন্য দায়ী আমরা যারা দলের নেতৃত্বে আছি। রাজ্য ও জেলা সর্বত্রই যোগ্য নেতৃত্বের অভাবেই এই ভাবে দল ছাড়ছেন কর্মীরা।’’