বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের ভোট নেওয়া শুরু উপনির্বাচনে। বৃহস্পতিবার শান্তিপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ ।
দুয়ারে নির্বাচন আক্ষরিক অর্থেই।
ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়েছে আগেই। ৩০ অক্টোবর শান্তিপুর বিধানসভার উপ-নির্বাচন। উৎসবের মরসুমেও রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার চলছে জোরকদমেই। তবে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে গেল ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বয়স্ক, প্রতিবন্ধীদের ভোট নেওয়া শুরু হল এ দিন থেকেই।
শান্তিপুর শহর ছাড়াও শান্তিপুর বিধানসভার মধ্যে রয়েছে শান্তিপুর ব্লকের ছয়টি পঞ্চায়েত। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৫৫টি বুথে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ৮৯৩ জন। তাঁদের মধ্যে বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী যাঁরা তাঁরা যাতে ভোট দিতে পারেন তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। চার মাস আগের নির্বাচনের সময়েও একই ব্যবস্থা ছিল। ভোটকর্মী থেকে শুরু করে নিরাপত্তাকর্মী সকলকে নিয়ে সঙ্গে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ভোটারের বাড়ি। থাকছে ভাঁজ করা বহনযোগ্য ভোটিং কম্পার্টমেন্টও। যাবতীয় কাগজপত্র সই সাবুদ করে পরিচয় পত্র দেখে বাড়িতেই ভোটিং কম্পার্টমেন্ট এবং ব্যালট বাক্স সাজিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির ভোটদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার শান্তিপুর ব্লক অফিস থেকেই রওনা দেন ভোটকর্মীরা বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন এলাকায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় হাজারের মতো ভোটারের ভোট নেওয়া হবে বাড়িতে গিয়ে। ২২টি দল বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই কাজ করবে। সেই দলে থাকছেন দু’জন করে ভোটকর্মী, এক জন মাইক্রো অবজার্ভার, কেন্দ্রীয় বাহিনীর চার জন জওয়ান, দু’জন পুলিশকর্মী, এক জন ভিডিয়োগ্রাফার। এ ছাড়াও যে এলাকায় ভোট নেওয়া হচ্ছে সেখানকার বুথ লেভেল অফিসারও যোগ দিচ্ছেন নিজের এলাকায়। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে তিন দিন ধরে চলবে এই কাজ।
বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতার কারণে অনেকেই ভোটকেন্দ্রে যেতে সমস্যায় পড়েন। কেউ কেউ মাঝে কয়েক বছর এই কারণে ভোটও দিতে পারেননি। এই ব্যবস্থার ফলে বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই তাঁরা ভোটদান করতে পারছেন বাড়িতে বসে। শান্তিপুর ব্লকের বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের ১ নম্বর নতুন ফুলিয়ার বাসিন্দা বছর ৯৮-এর রেণুবালা সরকার, ৮১ বছরের হরিপদ পাল যেমন শেষ বছর পাঁচেক আগে বুথমুখো হয়েছেন। এরপর আর শারীরিক কারণেই পেরে ওঠেননি। তবে এ বারের বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ভোট দিচ্ছেন। রেণুবালা, হরিপদেরা বলছেন, ‘‘বয়স হয়েছে, শারিরীক অসুস্থতাও রয়েছে। বুথে গিয়ে এখন আর ভোট দিতে পারি না। এখন বাড়িতেই ভোট নিতে আসছে। যেতে না পারার সমস্যা আর নেই।’’ শান্তিপুরের বিডিও প্রণয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাড়িতে গিয়ে ভোট গ্রহণের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাবতীয় বিধি এবং নিয়মকানুন মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”