Gunshot victim in Murshidabad

শমসেরগঞ্জে আরও এক গুলিবিদ্ধ তরুণের খোঁজ! যোগসূত্র রয়েছে কি অশান্তির সঙ্গে? দেখছে পুলিশ

মুর্শিদাবাদে গুলিবিদ্ধ হওয়া আরও এক তরুণের খোঁজ পেল পুলিশ। গত ১২ এপ্রিল তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। প্রথমে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল। পরে তাঁকে নিয়ে আসা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। সূত্রের খবর, ওই সময়েই ঘটনাটি পুলিশের নজরে আসে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:০২
কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল এবং (ইনসেটে) জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায়।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল এবং (ইনসেটে) জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায়। —ফাইল চিত্র।

আরও এক গুলিবিদ্ধ তরুণের খোঁজ মিলল মুর্শিদাবাদে! জানা গিয়েছে, গত ১২ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হন মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সি আতারুল মহলদার। তাঁর পায়ে গুলি লেগেছিল। প্রথমে দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলে, কিন্তু পা থেকে গুলি বার করা যায়নি। শেষে গত শনিবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর পা থেকে গুলি বের করা হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন তরুণ। তাঁর উপর নজর রাখছে পুলিশও। ঘটনাচক্রে, গত ১১ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ-সহ বেশ কিছু এলাকায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। অশান্তিতে এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ওই অশান্তি শুরুর ঠিক এক দিন পরেই গুলিবিদ্ধ হন আতারুল। এই ঘটনার সঙ্গে অশান্তির কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, আতারুলের পায়ে ছর্‌রা ধরনের একটি গুলি লেগেছিল। তাঁর পায়ের হাড়ের একটি অংশে বিপজ্জনক ভাবে গুলির অংশ আটকে ছিল। ১২ এপ্রিল ওই ঘটনার পর তাঁকে প্রথমে জঙ্গিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) বহরমপুরের একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। সেখানে ছ’দিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলে, তবে গুলির অংশ বার করা যায়নি। শেষে ওই তরুণকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেখানে সফল অস্ত্রপচারের পর আপাতত স্থিতিশীল রয়েছেন ওই তরুণ।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অমিতকুমার দাঁ বলেন, “ওই রোগী গত ১২ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হন। পরিবারের লোকজন তাঁকে বেসরকারি কোনও হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে বাড়িতে রেখেছিলেন। শনিবার তাঁকে মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। গুলি হাড়ের মধ্যে আটকে ছিল। অস্ত্রোপচার করে গুলি বার করা হয়েছে।” জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় জানিয়েছেন, অশান্তির ঘটনার সঙ্গে ওই যুবকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

তবে কী কারণে ওই তরুণকে প্রথমে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ওই তরুণকে ভর্তি করানোর পরেই ঘটনাটি পুলিশ-প্রশাসনের নজরে আসে। বস্তুত, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ঘিরে গত ১১ এপ্রিল অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু অঞ্চলে। অশান্ত পরিস্থিতিতে ভয়ে ঘর ছাড়েন অনেকে। মালদহ জেলায় আশ্রয় নেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য পুলিশ এবং বিএসএফ যৌথ ভাবে উদ্যোগী হয়। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীও (সিএপিএফ) মোতায়েন হয় উপদ্রুত এলাকাগুলিতে।

রবিবারও মুর্শিদাবাদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে টহল দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত এবং স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শমসেরগঞ্জ, ধুলিয়ানের উপদ্রুত এলাকাগুলিতে দোকান খুলেছে, ভিড়ও লক্ষ করা গিয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের উদ্যোগে ঘরছাড়াদের একাংশকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ধুলিয়ানে। তবে অশান্তির পর থেকে এখনও অনেকেই ঘরছাড়া। তাঁদেরও ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের বক্তব্য, “ঘরছাড়াদের ঘরে ফিরিয়ে দিলেই কাজ শেষ হচ্ছে না। তাঁদের স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরিয়ে দেওয়া প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্য।”

Advertisement
আরও পড়ুন