Momtaz Begum

বাংলাদেশের সঙ্গীতশিল্পী-সাংসদ মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি মুর্শিদাবাদে

চুক্তিভঙ্গ এবং প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বহরমপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক অলকেশ দাস এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৫১
মমতাজ বেগম।

মমতাজ বেগম। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী-সাংসদ মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে জারি হল গ্রেফতারি পরোয়ানা। চুক্তিভঙ্গ এবং প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বহরমপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক অলকেশ দাস এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এই মামলায় মমতাজের বিরুদ্ধে এর আগে তিন বার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। এর পর সঙ্গীতশিল্পী মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করেন। উচ্চ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। বহরমপুর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর মমতাজকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। পাল্টা মমতাজের আইনজীবী দেবাংশু সেনগুপ্ত জানান, তাঁর মক্কেল আদালতের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।

Advertisement

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ অগস্ট মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল মমতাজের। ৮ অগস্ট বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মমতাজের মামলার চার্জ গঠন করা হবে। সেই দিন মমতাজ উপস্থিত না হলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে। এর পরেই মমতাজ বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে একটি আবেদনপত্র আদালতে দাখিল করে জানান, ওই সময়ে তিনি কানাডায় একটি অনুষ্ঠানে থাকবেন। ফলে তাঁর পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব হবে না। মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেন।

আদালত সূত্রেই খবর, মুর্শিদাবাদে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য আয়োজক সংস্থার কর্তা শক্তিশঙ্কর বাগচীর সঙ্গে মমতাজের লিখিত চুক্তি হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক শক্তিশঙ্করের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মমতাজ নিয়মিত অংশ নিতেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ১৪ লাখ টাকায় মুর্শিদাবাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল শিল্পীর। তিনি অগ্রিম টাকাও গ্রহণ করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চুক্তি অমান্য করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি মমতাজ। এর পরেই শক্তিশঙ্কর চুক্তিভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মমতাজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার ভিত্তিতে আদালত পরবর্তী সময়ে সমন জারি করে। অভিযোগ, মমতাজ আদালতের নির্দেশ এড়িয়ে যান। এই মামলা শেষ পর্যন্ত হাই কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু সেখানে ‘রক্ষাকবচ’ পাননি মমতাজ। এর আগেও তামিলনাড়ুর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে মমতাজের বিরুদ্ধে। সেই মামলা এখনও তামিলনাড়ুর আদালতে বিচারাধীন।

মমতাজের বিরুদ্ধে মামলাকারী শক্তিশঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘২০০৮ সাল থেকে এই মামলা চলছে। আমিও এই মামলার শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব। এই মামলার জন্য আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। আমার সেই দিনের ১৪ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে অনুষ্ঠান না করায় বহু আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আমি ন্যায়বিচার চাই। আমার দেওয়া অগ্রিম অর্থ সুদ-সহ, মামলার সব খরচ এবং আমার ১৫ বছরের হয়রানির ক্ষতিপূরণের টাকা চাই।’’

পাল্টা মমতাজের আইনজীবী দেবাংশু সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘মক্কেলের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি। তবে আমার সঙ্গে এখন পর্যন্ত যা কথা হয়েছে, উনি আদালতকে সহযোগিতা করতে সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত। আশা করছি, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর উনি আদালতে হাজিরা দেবেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement