Adenovirus

সংক্রমণ, তবু একই ওয়ার্ডে

শুক্রবারও রাজ্যের একাধিক কর্তা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেলার কর্তাদের ভিডিয়ো কনফারেন্সে করে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৬:৫৩
অসুস্থ শিশুর ভিড় কৃষ্ণনগরে জেলা সদর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

অসুস্থ শিশুর ভিড় কৃষ্ণনগরে জেলা সদর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসুস্থ শিশুকে স্কুলে না পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। শিশু, অতিবৃদ্ধ ও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের সংক্রমিতদের থেকে দূরে থাকতে বলা হচ্ছে। অথচ নদিয়া জেলার হাসপাতালগুলিতে সংক্রমিত শিশুদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড নেই। অন্য শিশুদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে রাখা হচ্ছে তাদের। ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।

কেন জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া শিশুদের আলাদা ওয়ার্ডে রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে না? কল্যাণী জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আলাদা রাখার চেষ্টা সত্ত্বেও ভিড়ের চাপে তা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মতে, এখনও সেই পরিস্থিতি হয়নি। যদিও শুক্রবার পর্যন্ত শিশুমৃত্যুর খবর এসেছে। শনিবার নতুন করে আর কোনও খবর আসেনি।

Advertisement

অ্যাডিনোভাইরাস-সহ অন্য কিছু ভাইরাসের সংক্রমণে বিশেষত শিশুরা জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে। মৃত্যুও ঘটছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এই শিশুদের অক্সিজেন তো দিতে হচ্ছেই, অনেকের ক্ষেত্রে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটরেরও প্রয়োজন যা জেলার অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে নেই। ফলে স্বাস্থ্য ভবনের কড়কড়ি সত্ত্বেও জেলা সদর হাসপাতাল ওবং কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ‘রেফার’ হয়ে আসা রোগীর চাপ বাড়ছে। জেলা সদর হাসপাতাল থেকেও জেএনএমে লাগাতার রোগী পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, যে সব হাসপাতালে শিশুদের উপযোগী পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর নেই, তাদের করোনাকালে দেওয়া ভেন্টিলেটরগুলি শিশুদের জন্য ব্যবহারের উপযোগী করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবারও রাজ্যের একাধিক কর্তা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেলার কর্তাদের ভিডিয়ো কনফারেন্সে করে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম, সংক্রমিতদের থেকে বাকিদের দূরে রাখতে হবে।

কিন্তু এক মাত্র শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ওই ধরনের উপসর্গ নিয়ে আসা শিশুদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যদিও সেখানে অবস্থা সামাল দেওয়ার মতো আর কোনও ব্যবস্থা নেই। ‘রেফার’ করে দেওয়াই গতি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আওতায় থাকা আর কোনও হাসপাতালে সেটুকু ব্যবস্থাও করা হয়নি।

কৃষ্ণনগরে জেলা সদর হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত সরকারের দাবি, “এই ধরনের শিশুদের ওয়ার্ডের এক দিকে আলাদা করে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে সমস্যা হচ্ছে না।” কিন্তু রানাঘাট বা কল্যাণীর মতো অনেক জায়গাতেই ‘ঠাঁই নাই’ অবস্থা। একই শয্যায় দু’টি শিশুও রয়েছে কল্যাণী জেএনএমে।

কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কিছু শয্যা আলাদা আছে। জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুদের সেখানে রাখা হচ্ছে। সেগুলি ভর্তি হয়ে গেলে অন্যদের সঙ্গেই রাখতে হচ্ছে। উপায় থাকছে না।” রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের সুপার প্রহ্লাদ অধিকারীর বক্তব্য, “ছোট জায়গার মধ্যেই শিশুদের যতটা সম্ভব আলাদা রাখার চেষ্টা করছি।”

কেন আলাদা ওয়ার্ড করা হচ্ছে না?

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, “প্রয়োজন নেই বলেই সেটা করা হচ্ছে না। তবে ওয়ার্ডের ভিতর পর্দা দিয়ে আলাদা রাখার কথা বলা হয়েছে।”

আরও পড়ুন
Advertisement