Threatening Teacher

চাই না আপনার মতো শিক্ষিত লোক! শিক্ষককে ‘হুমকি’ রানিনগরের তৃণমূল নেতার

রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাক্তন প্রধানশিক্ষককে ফোনে এলাকা ছেড়ে দেওয়ার হুমকি এবং গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতার ব্যাখ্যা, এলাকায় যাতে অশান্তি না হয় তাই এই নিদান।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৩ ১৮:৩৪
A teacher allegedly threatened by a TMC leader at Raninagar of Murshidabad

প্রাক্তন শিক্ষক আতাউর রহমান এবং জাহাঙ্গির আলম।

রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাক্তন প্রধানশিক্ষককে ফোনে এলাকা ছেড়ে দেওয়ার হুমকি এবং গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এই ঘটনা মুর্শিদাবাদের রানিনগরের মালিবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। সম্প্রতি একটি অডিয়ো রেকর্ডিং ভাইরাল হয়েছে। যদিও ওই অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের সত্যতা স্বীকার করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে মালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা তথা প্রাক্তন শিক্ষক আতাউর রহমানের অভিযোগ, তাঁকে ওই হুমকি দিয়েছেন তৃণমূলের দখলে থাকা মালিবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জাহাঙ্গির আলম। জাহাঙ্গিরের ব্যাখ্যা, এলাকায় যাতে অশান্তি না হয় সেই কারণেই পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষককে এলাকার বাইরে থাকতে বলা হয়েছে।

আতাউর ডোমকলের ভবতারণ হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর নামে রানিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আতাউর। তাঁর অভিযোগ, মোবাইলে তাঁকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ভাইরাল হওয়া অডিয়োর যে রেকর্ডিং প্রকাশ্যে এসেছে তাতে আতাউরকে এক পুরুষকণ্ঠ বলে, ‘‘আমি প্রধান হিসাবে বলছি। আপনি এলাকায় নোংরামি করছেন। আপনার মতো শিক্ষিত লোক আমার এলাকায় দরকার নেই।’’ এর উত্তরে আতাউর বলেন, ‘‘তোমার দরকারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে না কি কিছু?’’ তখন ওই পুরুষকণ্ঠ পাল্টা বলে, ‘‘সম্পর্ক নেই মানে? আমি এলাকার প্রধান। নিশ্চয়ই সম্পর্ক আছে। সম্পর্ক আছে কি নেই, সেটা পরে বুঝবেন। আপনি দোকানে দোকানে যা খুশি বলবেন, চায়ের দোকানে যাবেন, যা খুশি তাই পেয়েছেন নাকি?’’ আতাউর পাল্টা জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অসত্য। এর পর পুরুষকণ্ঠকে হুমকির সুরে বলতে শোনা যায়, ‘‘চুপচাপ আপনি ডোমকল চলে যান। আপনি এসপিকে বলুন, এ প্রধান কথা বলল।’’

Advertisement

এ নিয়ে আতাউরের বক্তব্য, ‘‘ও (জাহাঙ্গির আলম) নানা প্রকার কাল্পনিক দোষে আমাকে দায়ী করে। আমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। আমাকে কুরুচিকর মন্তব্য করে। আশি বছর বয়সে এমন হুমকি পেয়ে আমি জর্জরিত। আমাকে দোষী করা হয়েছে। আমি এখন বাস্তুচ্যুত। আমি বাড়িতে থাকতে ভয় পাচ্ছি।’’

ফোনের কণ্ঠস্বর যে তাঁরই তা ঠারেঠোরে স্বীকার করে নিয়েছেন জাহাঙ্গির। তাঁর পাল্টা যুক্তি, ‘‘উনি রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত তা জানি। এর আগে উনি বাম আমলে পঞ্চায়েত সমিতির এবং জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৯২ সালে তিনি পদে থাকাকালীন তাঁর নেতৃত্বে ৬ জন খুন হয়। এখনও ওঁর বাড়ির কাছে আবার অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছেন। আমি ওঁকে বারণ করেছি। এলাকার স্বার্থে আমি প্রধান হিসাবে ওঁকে বলেছি। তা না হলে আপনি ডোমকলে আপনার বাড়িতে থাকুন। এটা বলা আমার অন্যায় হলে অন্যায় করেছি। আমি জনগণের স্বার্থে করেছি।’’

বিষয়টি শুনে তৃণমূলের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি কানে এসেছে। তবে বিস্তারিত বলতে পারব না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

Advertisement
আরও পড়ুন