নিহত সফিকুল ইসলাম। —ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজোর অষ্টমীর রাতে দোকান খুলে বসেছিলেন। অন্য দিনের থেকে খদ্দেরদের ভিড়ও বেশি জমেছিল ছোট্ট দোকানঘরটায়। সেই ভিড়ে ঠাসা দোকানে ঢুকেই দোকানের মালিকের উপর আচমকা হামলা চালাল আততায়ী। হাতের ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরে বসিয়ে দিল পরের পর কোপ। তার পর রক্তাক্ত শরীরটাকে দোকানের সামনেই ফেলে রেখে অস্ত্র হাতে দৌড় দিল সে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার মহাষ্টমীর রাতে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরের কাছে।
অষ্টমীর রাতে রাস্তাঘাটে লোকজন ছিল বেশি। পাড়ার ক্লাবের পাশেই ওই মুদিখানার দোকান। ক্লাবের সদস্যদের অনেকেই তখন বসেছিলেন ক্লাবের ভিতরে। হঠাৎই তাঁদের কানে আসে একটি গোঙানির শব্দ। সেই শব্দ শুনেই ছুটে গিয়ে ক্লাবের সদস্যরা দেখেন, পাশের দোকানটি রক্তে ভেসে যাচ্ছে। মেঝেতে পরে ছটফট করছেন ব্যবসায়ী। তাঁর শরীর ক্ষতবিক্ষত। কেউ যথেচ্ছ ধারালো অস্ত্রের কোপ বসিয়েছে তাঁর শরীরে।
তত ক্ষণে ঘটনাস্থল ছেড়ে চম্পট দিয়েছে আততায়ী। তাকে ছুটে পালাতেও দেখেন এলাকার মানুষ জন। তাঁরাই এর পর তড়িঘড়ি ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যবসায়ীর।
মৃত ব্যবসায়ীর নাম সফিকুল ইসলাম। বয়স ৩৮। মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর থানা এলাকার শিশাপাড়ায় দোকান তাঁর। রবিবার রাতের এই ঘটনার খবর পেয়ে এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে হামলাকারীর নাম টিয়ারুল শেখ। সেই রবিবার রাতে আচমকা সফিকুলের উপর হামলা করে। অন্ততপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ বার ধারালো অস্ত্রের কোপ মারে সফিকুলের শরীরে। তার পর এলাকা ছেড়ে পালায়।
পুলিশ টিয়ারুলের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। তাদের ধারণা, পুরনো শত্রুতার জেরেই খুন। যদিও তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। মৃত ব্যক্তির আত্মীয় মারজম শেখ জানান , ‘‘এত ভিড়ের মধ্যে থেকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে কী ভাবে খুন করা হল? কেনই বা খুন হতে হল সফিকুলকে, তা আমরা জানি না। তবে আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক’’। অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সূর্য প্রতাপ যাদবও জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মৃত ব্যক্তির ময়নাতদন্তও করা হচ্ছে’’।