বারুইহুদার পলাশ মণ্ডল খুনের ঘটনায় আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা সকলেই খুনে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। একটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। তবে মূল অভিযুক্ত কুশাই দাস, তাঁর ছেলে তুফান দাস ও শ্যালক হোঁদল দাস এখনও বেপাত্তা।
সোমবার ভোরে কৃষ্ণনগর স্টেশন সংলগ্ন বারুইহুদা এলাকায় বাড়িতে ঢুকে পলাশকে তাঁর বৃদ্ধা মা ও দুই মেয়ের সামনে কুপিয়ে-গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। পলাশও সমাজবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরেই খুন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পলাশ ছিল কুশাই দাসের বিরোধী প্রসেন দাসের গোষ্ঠীর লোক। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, রবিবার সন্ধ্যায় প্রসেনরা কুশাইয়ের ঘনিষ্ঠ এক লরির খালাসিকে মারধর করে। তারই বদলা নিতে পলাশের বাড়িতে চড়াও হয় কুশাইরা। যদিও ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, তারা প্রসেনকে খুন করতেই এসেছিল। তাদের কাছে খরব ছিল যে প্রসেন রাতে পলাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রসেনকে না পেয়ে তারা পলাশকেই খুন করে দেয়।
এই ঘটনার এক দিন পর রাতে তেহট্ট দিয়ে পালানোর সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় দুই ভাই, বারুইহুদার বাসিন্দা শুভজিৎ ও বাবুসোনা মুখোপাধ্যায়। তাদের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে পার্থ হালদার নামে আর এক দুষ্কৃতী। তাদের সাত দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। তাদের জিজ্ঞাসা করে একটি আগ্নেয়াস্ত্রেরও সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, শুভজিতের কাছে ছিল ওই দেশি পিস্তলটি। জেরায় সে কথা স্বীকারও করে শুভজিৎ ওরফে পাপ্পু। বৃহস্পতিবার তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভিতর থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। তবে এটি সে দিন খুনে ব্যবহার করা হয়েছিল কি না তা এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। কারণ জেরায় পুলিশ জেনেছে, কুশাইয়ের কাছেও একটি আগ্নেয়াস্ত্র আছে। সেটিও ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন পুলিশ। তবে ঘটনাস্থলে কুশাই ও পাপ্পু দু’জনেই ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। কুশাইকে গ্রেফতার করা পর পাপ্পুর সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
তবে এরই মধ্যে নানা জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা হল বারুইহুদার বাসিন্দা, কুশাই গোষ্ঠীর হারান চাকি ও তার ভাই অভিজিৎ চাকি, তাপস দেবনাথ, অখিল ভৌমিক ও আনন্দ সরকার। এই আনন্দ প্রায় ছ’মাস ধরে এলাকাছাড়া ছিল। আনন্দ ও কুশাই দুজনের সঙ্গেই শত্রুতা প্রসেন দাসের। এই খুনে জড়িত আরও কয়েক জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।