TMC Rally on 21 July

পঞ্চায়েতে জয়জয়কার, সেই সাফল্য কি ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে উদ্‌যাপন করবেন দুই গায়ক নচিকেতা-সুমন?

প্রায় প্রতি বারই ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন নচিকেতা চক্রবর্তী। সেই মঞ্চে একটা সময় গান গাইতেন কবীর সুমনও। এ বারের সমাবেশে কি সভামঞ্চে থাকবেন দুই গায়ক?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৩ ১০:১৪
Nachiketa Chakraborty and Kabir Suman

(বাঁ দিকে) গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী এবং কবীর সুমন (ডান দিকে) মঞ্চে একসঙ্গে। —ফাইল চিত্র।

ফি-বছর ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে ধারাবাহিক গাইয়ে তিনি। প্রায় প্রতি বছরই তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশে বৃষ্টি হয়। আর সে বৃষ্টির মধ্যে তিনি শেষ গান ধরেন— ‘এক দিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবী আবার শান্ত হবে’। এই ২০২৩ সালেও তার অন্যথা হচ্ছে না। ধর্মতলার মঞ্চে হাজির থাকবেন গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী। তবে ৩০০ বছর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে মন্দির নির্মাণ হবে বলে যিনি স্বপ্ন দেখেন, সেই কবীর সুমন যাচ্ছেন না ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে।

তৃণমূলের বাৎসরিক শহিদ সমাবেশ এবার একইসঙ্গে পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ের বিজয়োৎসবও বটে। বস্তুত, ২০১১ সাল থেকে যে কোনও নির্বাচনের পরের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশই একধারে উদ্‌যাপনের সমাবেশেও পরিণত হয়। শুক্রবারের সমাবেশ প্রসঙ্গে নচিকেতা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। নচিকেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমায় ডেকেছেন। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওনা। আমি ওই দিন মঞ্চে যাব।’’ওই দিনের জন্য কি কোনও বিশেষ পারফরম্যান্সের পরিকল্পনা রয়েছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমার আগে থেকে কোনও প্ল্যান থাকে না। ওখানে গেলে দেখা যাবে।’’

Advertisement

তবে নচিকেতা থাকলেও সুমন থাকছেন না ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে। তার কারণ তাঁর স্বাস্থ্য। ‘গানওয়ালা’ বলেন, ‘‘আমার শরীরের যা হাল, তাতে ওই ধরনের ধকল নেওয়া সম্ভব নয়।’’ সুমন আরও বলেন, ‘‘আমার ৭৫ চলছে। এই জীবনসায়াহ্নে আমি সম্পূর্ণ ভাবে নিবেদিত বাংলা ভাষায় খেয়ালগান বা বন্দিশ রচনা, গাওয়া ও কিছুটা শেখানো নিয়ে। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বময় কাজ। আমার মা-ভাষার সেবা।’’

বাম জমানায় নচিকেতা পরিচিত ছিলেন প্রয়াত সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে। তবে রাজ্যে পট পরিবর্তনের আগে থেকেই তিনি মমতার ‘ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন’। গায়ক সুমন বাম জমানায় ‘প্রতিবাদী’ ভূমিকা নিয়েছিলেন। কানোরিয়া জুটমিলের শ্রমিক আন্দোলনে সুমনের যোগদান বাংলার রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলেছিল।সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে সুমনের ‘তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা’ আরও বাড়ে। মমতার আন্দোলন মঞ্চে শামিল হন তিনি। তার পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেন তৃণমূলে। ২০০৯ সালে তৃণমূলের টিকিটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছিলেন সুমন। যদিও তার বছর দুয়েকের মধ্যে তৃণমূলের একাংশের সঙ্গে তাঁর অ-বনিবনা শুরু হয়। প্রকাশ্যে অভিযোগও করেন দলীয় নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে। তার পরবর্তী সময়ে কয়েকটি ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে তৃণমূলের সঙ্গে সুমনের ‘দূরত্ব’ তৈরি হলেও আবার মমতার কাছাকাছি চলে আসেন ‘নাগরিক কবিয়াল’। এ বার সুমনকে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সুমন জানিয়েছেন, এই বয়সে তিনি সভামঞ্চে যাওয়ার ধকল সামলাতে পারবেন না। অর্থাৎ, নচিকেতাকে ধর্মতলার মোড়ে দেখা গেলেও সুমনকে পাবে না শুক্রবারের সমাবেশ।

Advertisement
আরও পড়ুন