রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে দুঃখপ্রকাশ করবেন কারামন্ত্রী অখিল গিরি। ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কুমন্তব্যে অভিযুক্ত তিনি। এই কাণ্ডে পাশে দাঁড়ায়নি তাঁর দলও। এ বার সেই কাণ্ডে দুঃখপ্রকাশ করে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি পাঠাবেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানিয়েছেন, যখন রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠাবেন সকলকে জানাবেন। ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার নন্দীগ্রামে তৃণমূলের এক সভায়। নন্দীগ্রামে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছ অখিলের বিরুদ্ধে। নন্দীগ্রামে অখিলের ওই সভার একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে (আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি)। তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও সেখানে হাজির ছিলেন। ওই সভায় অখিলকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’’ তার পরেই বিতর্ক চরমে ওঠে।
শনিবার সর্বভারতীয় তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি টুইট করে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতি, শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমাদের পরম শ্রদ্ধা। আমাদের দলের বিধায়কের করা দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করি এবং স্পষ্ট করে জানাতে চাই যে অখিল গিরির মন্তব্যের আমরা তীব্র বিরোধিতা করি।’’ সঙ্গে আরও লেখা হয়েছে, ‘‘নারীর ক্ষমতায়নের যুগে এ ধরনের দুর্ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়।’’
যদিও বির্তক দানা বাঁধার পর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন অখিল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এক মাস আগে থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন জায়গায় আমার সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। আমি বয়স্ক মানুষ। আমার মনে ক্রোধ জন্মেছিল। রাষ্ট্রপতি মহোদায়াকে আমি কোনও অসম্মান করিনি। তাঁর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে, তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে এসেছে। আমি অনুতপ্ত।’’ কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি আয়ত্তে না এলে, রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখে দুঃখপ্রকাশ করে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেন রাজনৈতিক ভাবে ‘কোণঠাসা’ অখিল।
তাঁর এমন সিদ্ধান্তের পরেও অখিলের সমালোচনা করেছে বিজেপির তফসিলি মোর্চা। সংগঠনের সভাপতি তথা হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মু বলেন, ‘‘আমরা আদিবাসী দলিত শ্রেণির পরিবার থেকে উঠে আসা একজন তফসিলি জনজাতি মহিলাকে দেশের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করেছিল বিজেপি। যিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী তিনিও দেশের আদিবাসী সম্প্রদায় ও পিছিয়ে পড়া মানুষকে সম্মান দিয়েছেন। জনজাতি মহিলা দ্রোপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদে বসিয়েছেন। অথচ আমরা দেখলাম তাঁর কী ভাবে অসম্মান করা হল। আসলে তারা বুঝিয়ে দিয়েছেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের কোনও সম্মান নেই।’’