পুলিশি নিরাপত্তায় সহায়তা শিবির, পরিদর্শনে এসডিপিও
TMC-BJP Conflict

শিবিরে হামলা, আজ পাল্টা সভা তৃণমূলের

গত রবিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মহম্মদপুর বাজারে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বকেয়া টাকা মেটানো নিয়ে তৃণমূল গাড়িতে প্রচার করছিল। সেই গাড়ি আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪৫
An image of flags

—প্রতীকী চিত্র।

বাধার আশঙ্কা ছিল। সে জন্য দলীয় সহায়তা শিবিরের আয়োজনের ক্ষেত্রে বিরোধী বিজেপির সঙ্গে সঙ্ঘাত এড়াতে কৌশলী হয়েছিল তৃণমূল। এর পরেও নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সহায়তা শিবির খোলা ঘিরে বিজেপির বাধায় রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের তরফে এলাকায় এবং ওই শিবিরের নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি, রাজনৈতিকভাবেও বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

গত রবিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মহম্মদপুর বাজারে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বকেয়া টাকা মেটানো নিয়ে তৃণমূল গাড়িতে প্রচার করছিল। সেই গাড়ি আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগে সোমবার দুপুরে নন্দীগ্রামে গোকুলনগর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সহায়তা শিবিরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। পুলিশ তিনজন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে।

এই আবহে এমনিতে নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নন্দীগ্রাম থানায় পুলিশ আধিকারিক রয়েছেন ১৪ জন (ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার একজন এবং ১৩ জন কনস্টেবল রয়েছেন)। এর পরেও মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম থানায় ছ’জন অতিরিক্ত পুলিশ আধিকারিক এবং ২৫ জন এনবিএফ কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়। সোমবার গোকুলনগরে যে সহায়তা শিবিরে হামলার অভিযোগ ওঠে, মঙ্গলবার সেখানে ফের শিবির করা হয়। কাছেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদে জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শেখ সামসুল ইসলাম বলেন, ‘‘সহায়তা শিবিরগুলিতে পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য গিয়েছিল। যদিও আমরা পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি দাউদপুর, কেন্দেমারি, সামসাবাদ, কালীচরণপুর পঞ্চায়েত এলাকায় শিবিরে পুলিশের প্রয়োজন নেই। অন্যান্য গ্রামপঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে শিবির থেকে দূরেই পুলিশ ছিল।’’

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা কেন্দ্র তৃণমূলের সহায়তা শিবিরে হামলার ঘটনাকে হাতিয়ার করে প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছে শাসকদলও। দলীয় সূত্রে খবর, ওই হামলার প্রতিবাদে আজ, বুধবার নন্দীগ্রাম বাজারে কর্মিসভা করবে তৃণমূল। ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ-সহ জেলা নেতৃত্ব। হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাতে থানায়ও যাবেন কুণাল। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে শ্রমিকদের জন্য শিবিরে বিজেপি যেভাবে হামলা করেছে, তার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার আমরা সেখানে কর্মিসভা করব। এলাকাবাসীর কাছে যাব, তাঁদের আশ্বস্ত করার জন্য।’’

পূর্ব মেদিনীপুরে ২২৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে গত পঞ্চায়েত ভোটে অন্তত ৮০টিতে বিজেপি ক্ষমতা দখল করেছে। এর মধ্যে নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের ১৭টির মধ্যে ১০টি রয়েছে বিজেপি। বিজেপির দখলে থাকা ১০টি পঞ্চায়েতে সংঘাত এড়াতে অফিস থেকে কিছু দূরে শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। এর পরেও সংঘাত হওয়ায় এখন বিষয়কে হাতিয়ার করেই নন্দীগ্রামে দলের কর্মীদের নিয়ে লোকসভা ভোটের প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছে তৃণমূল। তাতে অবশ্য কটাক্ষ করছে বিজেপি। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও অত্যাচারের জন্য পুলিশ ও শাসকদলের তরফে পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে নন্দীগ্রামবাসী তৈরি। প্রয়োজনে ফের আন্দোলনে নামা হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement