Midnapore BJP

বিজেপি নেতার মুখে শাসকের প্রশংসা, দলবদলের জল্পনা

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় নিজের বিধায়ক থাকাকালীন কমিউনিটি হল তৈরি করতে না পারার জন্য স্বদেশ ব্যর্থতা স্বীকার করে নেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
রামনগর শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:১৭
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মৎস্যজীবীদের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিধানসভা নির্বাচনের দুই যুযুধান। সেখানে দু’জনকে দেখা গেল খোশমেজাজে। এমনকী, শাসক শিবিরের প্রার্থীর কাছে পরাজিত গেরুয়া শিবিরের নেতাকে শোনা গেল রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশাংস করতে।

Advertisement

গত বিধানসভা নির্বাচনে রামনগরে তৃণমূলের প্রার্থী অখিল গিরির বিরুদ্ধে লড়েছিলেন বিজেপির স্বদেশ নায়ক। নির্বাচনে তিনি অখিলের কাছে পরাজিত হন। রাজনৈতিক ময়দানে এই দুই ‘শত্রু’ বুধবার শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর এলাকায় স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। সেখানে মৎস্যজীবীদের জন্য একটি কমিউনিটি হল তৈরির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সেই ভিত্তিপ্রস্তরের উদ্বোধন করেন বিধায়ক অখিল। তাঁর বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ওই কাজে চার লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এ দিন অখিল আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে ‘শঙ্করপুর ফিসারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদক হলেন স্বদেশ।

ওই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় নিজের বিধায়ক থাকাকালীন কমিউনিটি হল তৈরি করতে না পারার জন্য স্বদেশ ব্যর্থতা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও কারণবশত সে সময় এটা নিয়ে কিছু করতে পারিনি। তবে এখন যাঁদের কথা অস্বীকার করা যাবে না, তাঁরা হলেন অখিলদা, জেলা পরিষদ সদস্য শম্পা (মহাপাত্র)। আপনাদের রামনগরবাসী দু’হাত ধরে আশীর্বাদ করেছেন। আপনারা যদি উন্নয়ন করেন, তাহলে আগামী দিনেও আমরা আপনাদের পাশে থাকব।’’ একই সঙ্গে স্বদেশ বলেন, ‘‘আমরা চাইব একটা গঙ্গা মন্দির রাজ্য সরকার গড়ে দিক। খেলার মাঠ বাঁচানো হোক। আর সমুদ্র ক্রমশ এগিয়ে আসছে। বাঁধ যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে। তাই বাঁধ রক্ষা করুন অখিলদা।’’

স্বদেশের বক্তৃতা শুনে অখিল বলেন, ‘‘গঙ্গা মন্দিরের জন্য ভূমি দফতরে লিখিত আবেদন জানাতে হবে। তবে বাঁধের বিষয়টি দ্রুত দেখা হচ্ছে।’’ এ ব্যাপারে স্বদেশকে একটি রূপরেখা তৈরি করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সে সময় স্বদেশকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অখিল সাক্ষাৎ করাতে পারেন বলেও জানান। এ দিনের এই কর্মসূচিতে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য শম্পা মহাপাত্র, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাই সার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বাম আমলে সিপিএমের প্রতীকে রামনগরের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন স্বদেশ। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি তাঁকে দলের রাজ্য কমিটির সদস্য করেছিল। ২০১১ সালের পর একাধিকবার অখিলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিধানসভা নির্বাচনে। তবে পরাজিত হয়েছেন প্রতিবার। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে স্বদেশের দলবদলের জল্পনা শোনা যায়। এখন শাসক বিধায়কের সামনে বিজেপি নেতার মুখে রাজ্য সরকারের প্রশংসা ফের সেই জল্পনা মাথা চাড়া দিয়েছে। এ বিষয়ে বিজেপির জেলা (কাঁথি) সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলেন, ‘‘কে, কী বলেছেন, জানি না।’’

অন্যদিকে, স্বদেশের প্রশংসা করছেন তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা। তিনি বলছেন, ‘‘স্বদেশদা লোকসভা নির্বাচনে আমাদের দলের প্রার্থী উত্তম বারিককে আশীর্বাদ করেছিলেন। উনি বুঝতে পেরেছেন যে, আগে রাজ্য সরকারের আমলে কোনও উন্নয়নের সুযোগ ছিল না। যা এখন সম্ভব হচ্ছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন