শুক্রবার থেকে শুরু হল সপ্তম দুয়ারে সরকার। ঝাড়গ্রামের বাছুরডোবা টাউনহলে চলছে শিবির। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার থেকে শুরু হল সপ্তম দফার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। শিবিরের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখছে নবান্নও। নবান্নের নির্দেশে জেলায় জেলায় আসছেন সিনিয়র আইএএস অফিসারেরাও। তাঁরা শিবির পরিদর্শন করবেন। কাজ ঠিকমতো চলছে কি না দেখে নবান্নে রিপোর্ট দেবেন। তার ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বছর ঘুরলে লোকসভা ভোট। তার আগে এই প্রকল্পকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে নবান্ন। তাই নজরদারিতে কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না। প্রশাসন সূত্রে খবর, মেদিনীপুরের তিন জেলায় পাঁচ সিনিয়র আইএএস আসছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন আর অর্জুন এবং সুরেন্দ্র গুপ্ত। আর অর্জুন এক সময়ে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক ছিলেন। সুরেন্দ্র গুপ্ত অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক ছিলেন। এ জেলায় মহকুমা ভিত্তিক দায়িত্ব বন্টন হয়েছে। আর অর্জুন মেদিনীপুর (সদর) মহকুমার দায়িত্বে। সুরেন্দ্র গুপ্ত খড়্গপুর এবং ঘাটাল মহকুমার দায়িত্বে। সিনিয়র আইএএস অফিসারেরা নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত মহকুমার অন্তর্গত ব্লকে, শহরে গিয়ে শিবির পরিদর্শন করবেন। ঝাড়গ্রামে আসছেন রশ্মি কমল। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক ছিলেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রথম দিন প্রায় পাঁচশো শিবির, ঝাড়গ্রামে প্রায় আড়াইশো শিবির হয়েছে। ১ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিবির চলবে। ৩৫টি পরিষেবা পাওয়ার আবেদন জানানোর সুযোগ থাকছে। আবেদন জমা পড়ার পরে সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। ১৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিষেবা প্রদানের সময় ধার্য করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫,৪৪৯টি শিবির হওয়ার কথা। ঝাড়গ্রামে ২,১৯৬টি শিবির হওয়ার কথা। প্রতিটি অঞ্চলে, প্রতিটি ওয়ার্ডে শিবির হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘সুষ্ঠুভাবে শিবির শুরু হয়েছে। ভ্রাম্যমান শিবিরও হচ্ছে।’’ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল জানিয়েছেন, ঝাড়গ্রামে যে ২,১৯৬টি শিবির হবে, তারমধ্যে ৪০৯টি ভ্রাম্যমাণ শিবির। আগের বার সবমিলিয়ে ১,৪০৩টি শিবির হয়েছিল। জেলাশাসকের কথায়, ‘‘এ বার শিবির বাড়ানো হয়েছে। আরও বেশি জায়গায় এলাকাবাসীকে পরিষেবা দিতেই এমন উদ্যোগ।’’
কর্মসূচির প্রচারে ঝাড়গ্রামে এলইডি স্ক্রিনযুক্ত প্রচার গাড়ি বেরিয়েছে। আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করান জেলাশাসক। মেদিনীপুর শহরে এ দিন সকালে ভ্রাম্যমাণ শিবির শুরু হয়েছে। সূচনায় ছিলেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক কৌশিক চট্টোপাধ্যায়।
পরে তিনি একাধিক শিবির পরিদর্শনে গিয়েছেন। ঘুরে দেখেছেন। শিবিরে আসা লোকজনেদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, কোথাও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রথম দিন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র আবেদন জানাতে অনেকে এসেছেন। পাশাপাশি, শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ভিড় করেছেন। নাম নথিভুক্তির জন্য। বার্ধক্য ভাতার আবেদন জানাতেও অনেকে এসেছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে যেমন এ দিন ৩,৬৭২ জন পরিযায়ী শ্রমিকের নাম নথিভুক্তির আবেদন জমা পড়েছে। ৩,৩৫৬ জন মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুবিধা চেয়ে আবেদন করেছেন। ২,৬৩৮টি বার্ধক্য ভাতার আবেদন জমা পড়েছে।