Hindu Suraksha Bahini

জঙ্গলমহলে ‘হিন্দু সুরক্ষা বাহিনী’, প্রশ্ন

জঙ্গলমহলে সঙ্ঘের ১২টি শাখা সক্রিয়। তবে হিন্দুদের প্রকাশ্যে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে এই প্রথম ‘হিন্দু সুরক্ষা বাহিনী’ গড়া হয়েছে।

কিংশুক গুপ্ত
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:১৭
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তি ও কাশ্মীরে জঙ্গি হানার প্রেক্ষিতে ঝাড়গ্রাম জেলার চারটি বিধানসভা এলাকায় (ঝাড়গ্রাম, বিনপুর, গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রাম) গড়া হল ‘জঙ্গলমহল হিন্দু সুরক্ষা বাহিনী’। উদ্যোক্তাদের দাবি, জাতীয়তাবাদী ভাবনায় অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার স্বার্থে ওই বাহিনী গড়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, এই উদ্যোগ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস)। তবে সঙ্ঘের প্রথম সারির লোকজন এই বাহিনীর বিধানসভাভিত্তিক কার্যকরী কমিটিতে থাকছেন না। রাজনৈতিক নেতাদেরও বাহিনীতে রাখা হচ্ছে না। ‘জঙ্গলমহল হিন্দু সুরক্ষা বাহিনী’র জেলার অন্যতম আহ্বায়ক বাপ্পা বসাক ও অনুপম সিংহ বলছেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে সমস্ত হিন্দুদের একত্রিত করতেই এমন উদ্যোগ। ‘হিন্দুর পাশে হিন্দু’ স্লোগান সামনে রেখে জেলা জুড়ে নানা কর্মসূচি ও প্রচার চলবে।’’ প্রথম পর্যায়ে বাহিনীর উদ্যোগে হিন্দু শৌর্য পদযাত্রার আয়োজন হচ্ছে। আজ, রবিবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহরে এই পদযাত্রা হবে।

জঙ্গলমহলে সঙ্ঘের ১২টি শাখা সক্রিয়। তবে হিন্দুদের প্রকাশ্যে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে এই প্রথম ‘হিন্দু সুরক্ষা বাহিনী’ গড়া হয়েছে। সূত্রের খবর, কাশ্মীরের ঘটনার পরে, সঙ্ঘের তরফে প্রতিটি বিভাগের প্রমুখদের দায়িত্ব নিয়ে হিন্দুদের সংগঠিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে সর্বসাধারণের একাংশ সরাসরি আরএসএসের কর্মসূচিতে যুক্ত হতে চান না। তাই ‘হিন্দু সুরক্ষা বাহিনী’ গড়া হচ্ছে। সঙ্ঘের বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী শাখা সংগঠনের কর্মীদের বাহিনীতে রাখা হয়েছে। তবে সঙ্ঘ এবং বিজেপির পরিচিত মুখ সামনে থাকবে না। জানা গিয়েছে, প্রকাশ্য কর্মসূচির পাশাপাশি, হিন্দুদের বাড়ি-বাড়ি প্রচার চালাবে বাহিনী। সেখানে হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষার নানা বিষয় থাকবে। জাতীয়তাবাদের প্রচারও চলবে।

সঙ্ঘের মেদিনীপুর বিভাগের সম্পর্ক প্রমুখ উত্তম বেজের কথায়, ‘‘সঙ্ঘের উদ্যোগে হিন্দুত্ব জাগরণের কাজ একশো বছর ধরে চলছে। হিন্দু সুরক্ষা বাহিনী সেই প্রচারেরই একটা সদর্থক পদক্ষেপ।’’ তবে সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকারের কটাক্ষ, ‘‘হিন্দু সুরক্ষার নামে সম্প্রদায়গত বিভাজন ঘটাতেই সঙ্ঘের এই ভাবনা।’’ জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গীর টিপ্পনী, ‘‘হিন্দুদের সংগঠিত করার নামে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

যদিও বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অবনী ঘোষ বলছেন, ‘‘অন্য সম্প্রদায় জোট বাঁধলে, কারও মনে প্রশ্ন আসে না। হিন্দুরা জোট বাঁধলেই যত প্রশ্ন।’’

আরও পড়ুন