আজ থেকে শুরু সপ্তম ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির
Duare Sarkar Campaign

লক্ষ পরিযায়ীর নাম নথিভুক্তির লক্ষ্যমাত্রা

প্রশাসন জানিয়েছে, পরিযায়ী রা এখন এলাকায় থাকলে, নিজেরাই শিবিরে‌ নাম নথিভুক্তির আবেদন জানাতে পারেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:০৯
পরিযায়ী শ্রমিক।

পরিযায়ী শ্রমিক। —ফাইল চিত্র।

আবারও শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির— আজ, শুক্রবার থেকে। এ বার একাধিক নতুন পরিষেবার অন্তর্ভুক্তি হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করা যাবে, জানানো যাবে বার্ধক্যভাতার আবেদন। শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড় হবে ধরে নিয়েই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরেছে প্রশাসন। জেলায়, ব্লকে, শহরে প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে এক লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের নাম নথিভুক্তির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

Advertisement

জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘এটা একটা বিরাট কর্মসূচি। সুষ্ঠুভাবে শিবির আয়োজনে জেলা থেকে যে সব পদক্ষেপ করার, সবই করা হয়েছে।’’ জেলাশাসক মানছেন, ‘‘এক লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের নাম নথিভুক্তির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।’’ জেলার কতজন পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে অন্যত্র কাজ করেন? জেলাশাসকের জবাব, ‘‘নাম নথিভুক্তি শুরু হচ্ছে। সঠিক সংখ্যা এর মাধ্যমেই পাব।’’

করোনা-কালের প্রাথমিক একটি হিসেব প্রশাসনের কাছে রয়েছে। তখন দেখা গিয়েছিল, এই জেলার পরিযায়ী শ্রমিকরা সব থেকে বেশি থাকেন ৫টি রাজ্যে— মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটক। পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, কেরল, পড়শি ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহার প্রভৃতি রাজ্যেও বেশ কিছু সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক থাকেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই পর্বে ভিন্ রাজ্য থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ফিরেছিলেন প্রায় ৬৯ হাজার জন। এর মধ্যে দাসপুর-১ ব্লকের প্রায় ১২,০০০ জন, দাসপুর- ২ ব্লকের প্রায় ৯,০০০ জন, কেশপুরের প্রায় ৭,৫০০ জন, ঘাটালের প্রায় ৭,০০০ জন। তারপর পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কি আরও বেড়েছে? এ নিয়ে জল্পনা রয়েছে।

প্রশাসন জানিয়েছে, পরিযায়ী রা এখন এলাকায় থাকলে, নিজেরাই শিবিরে‌ নাম নথিভুক্তির আবেদন জানাতে পারেন। না থাকলে পরিবারের লোক তাঁর নাম নথিভুক্তির আবেদন জানাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কিছু নথিপত্র লাগবে যেমন আধার কার্ড। প্রশাসন সূত্রে খবর, নাম নথিভুক্তি হয়ে থাকলে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুতে পরিবার ৫০ হাজার টাকা সরকারি সাহায্য পাবে। দুর্ঘটনায় মারা গেলে পরিবার পাবে ২ লক্ষ টাকা পাবে।মনে করা হচ্ছে, নাম নথিভুক্তির মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্য ভান্ডার তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য।

এ বারের ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির ১ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। ৩৫টি পরিষেবা পাওয়ার আবেদন জানানোর সুযোগ থাকছে। ১৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিষেবা প্রদানের সময় ধার্য করা হয়েছে। জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার শিবির হতে পারে। প্রতিটি অঞ্চলে, প্রতিটি ওয়ার্ডে শিবির হবে। প্রতিটি শিবিরে ন্যূনতম ১৬টি কাউন্টার থাকার কথা। এক-একটি দফতরের এক-একটি কাউন্টার।

এই নিয়ে সাত দফায় ‘দুয়ারে সরকারে’র শিবির হচ্ছে। এই শিবির প্রথম হয়েছিল গত বিধানসভা ভোটের আগে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা সাধারণ মানুষকে পাইয়ে দেওয়াই এই কর্মসূচির লক্ষ্য। এক একবার এক একটি প্রকল্প সাড়া ফেলেছে। যেমন, বিধানসভা ভোটের আগে ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ভোটের পরে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’ আবেদন করায় ভিড় উপচে পড়েছিল। অনুমান, এ বারও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’ ভালই আবেদন আসবে। পাশাপাশি, শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ভিড় করবেন। পরিস্থিতি সামনাতে প্রতিটি শিবিরে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারের আশা, ‘‘সুষ্ঠুভাবেই জেলায় শিবির হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement