—প্রতীকী চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ফের এল হাতি প্রসঙ্গ। হাতি সমস্যা মেনেও পরিবেশ কর্মীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। হাতি নিয়ে পড়শি রাজ্যর ভূমিকাও যে সন্তোষজনক নয়, সেকথাও মনে করালেন তিনি।
বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এখন বন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে একান্তে বৈঠকে হাতির সমস্যা নিয়ে বিরবাহার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সভায় বলেন, ‘‘আমি জানি মাঝে মাঝেই হাতি বেরিয়ে পড়ে। খুব সমস্যা হয় মানুষের। হাতির পাল অনেক সময় আমি দেখি। হাতিকে আমি খুব ভালবাসি। হাতিরা আমাদের সাথী।’’ সেই সঙ্গে পরিবেশ কর্মীদের একাংশকে ইঙ্গিত করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘হাতি মানুষ মারলে পরিবেশের কেউ কেউ আছে তাঁদের কানে ওঁদের কান্না যায় না। কিন্তু মানুষ যদি ভুল করে একটা হাতির গায়ে হাত দিয়ে ফেলে শোরগোল তৈরি হয়ে যায়। আমি বলি হাতিও প্রাণে বাঁচুক ও প্রাণীও প্রাণে বাঁচুক।’’
বেশ কয়েক বছর ধরেই হাতির হানায় ঝাড়গ্রাম জেলায় পর পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। জঙ্গলমহলের এই জেলায় কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতির দল। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্ষয়-ক্ষতিও। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাতি যদি কাউকে মেরে ফেলে সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ লক্ষ টাকা পাবে। আর একটি চাকরিও পাবে। ইতিমধ্যে ৭৫০ জনকে বন দফতরে গতকাল চাকরি দিলাম। ১২ হাজার টাকা করে তাঁরা মাইনে পাবে। ৬০ বছর পর্যন্ত সে চাকরি করবে।’’ জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের পর থেকে সারা রাজ্যে হাতির হানায় মৃতদের পরিজনেরা ওই চাকরি পেয়েছেন। এদিন গন্ধেশ্বরী বেরা ও লক্ষ্মীরানি মাহাতো নামে হাতির হানায় মৃতের পরিবারের দুই পরিজনকে হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঝাড়গ্রাম জেলায় হাতির হানায় মৃত ৪৫ জনের পরিজনকে ২০১৯ সালে জেলা পুলিশের স্পেশাল হোমগার্ড পদে চাকরি দেওয়া হয়। তারপর হাতির হানায় মৃত্যুর পরে ক্ষতিপূরণ পেলেও চাকরি মিলছিল না। ফলে ক্ষোভ বাড়ছিল। লোকসভা ভোটের আগে চাকরির নিয়োগপত্র দিয়ে সেই ক্ষোভ অনেকটাই প্রশমিত করলেন মমতা। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ঝাড়গ্রাম জেলায় গত কয়েক বছর ধরেই হাতি বছরভর থাকছে। এমনকি উপযুক্ত পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাদ্যের জেরে প্রজনন হচ্ছে। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে হাতির সংখ্যা। বিষয়টি মেন মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‘হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা নিয়ে পরে আমাদের আলোচনা করতে হবে। যাতে তারা বন থেকে বেরোতে না পারে। বনে ফেন্সিংটা ভাল করে হয়।’’ কয়েক বছর আগে ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে হাতির উপদ্রব নিয়ে বন আধিকারিকদের বেজায় ধমক দিয়েছিলেন। হাতি রুখতে পরিখা কাটা ও ফেন্সিং করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন।