Market Price

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, বাজারে সাতসকালেই অভিযান

এ দিন সকালে ময়নার অন্যতম ব্যস্ত বৃহস্পতিবারের বাজারে যান বিডিও সমীর পান ও থানার ওসি সোমনাথ শিট। বাজারে ঘুরে আনাজ, মাছ, ও ফলের পাইকারি এবং খুচরো দর নিয়ে খোঁজ নেন তাঁরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৮
মেদিনীপুর শহরের গেটবাজারে আনাজের দাম নিয়ে চললো পুলিশি অভিযান। বুধবার সকালে।

মেদিনীপুর শহরের গেটবাজারে আনাজের দাম নিয়ে চললো পুলিশি অভিযান। বুধবার সকালে। ছবি: গোপাল পাত্র।

আনাজের চড়া দরে আমজনতার নাভিশ্বাস। সমস্যা সমাধানে পুলিশ-প্রশাসনকে বাজারে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে আনাজের দর কমাতে ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন বাজারে গিয়ে আনাজ, ফল, মাছ ব্যবসায়ীদের থেকে দরদামের খোঁজ নিলেন বিডিও ও পুলিশ আধিকারিকরা।

Advertisement

এ দিন সকালে ময়নার অন্যতম ব্যস্ত বৃহস্পতিবারের বাজারে যান বিডিও সমীর পান ও থানার ওসি সোমনাথ শিট। বাজারে ঘুরে আনাজ, মাছ, ও ফলের পাইকারি এবং খুচরো দর নিয়ে খোঁজ নেন তাঁরা। কী কারণে আনাজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাও ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চান বিডিও। একই ভাবে তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের নোনাকুড়ি বাজারে যান বিডিও রথীন দে-সহ তমলুক থানার পুলিশ বাহিনী। আনাজের পাইকারি ও খুচরো দাম জেনে খাতায় লিখে নেন বিডিও।

প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে জেলার সব ব্লকে গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলিতে আনাজ, মাছ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসের দরদামের খোঁজ নিতে ব্লক প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। বিডিও ও থানার আধিকারিকরা ছাড়াও কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক-কর্মীরাও বিভিন্ন বাজারে যাবেন। তারপর জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। জেলা প্রশাসনের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে জেলার ছোট-বড় বাজারগুলিতে আনাজপত্রের দর নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে।

জেলার অন্যতম বৃহৎ আনাজ ও ফলের বাজার চলে পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারে। ওই পাইকারি আনাজ বাজার থেকে পূর্ব মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ব্যবসায়ীরা আনাজপত্র কিনে নিয়ে যান। তাই পাঁশকুড়ার স্টেশন বাজারেও আনাজের জোগান ও পাইকারি দরের উপরে নজরদারি চালানো হবে।

এগরা মহকুমার এগরা দিঘা মোড় ও ভগবানপুরে ভীমেশ্বরী এই দুই বাজারেও আনাজের পাইকারি বিক্রি চলে। পঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ একাধিক রাজ্য থেকে আনাজ এই পাইকারি বাজারে আমদানি হয়। পাশাপাশি এগরার ও পটাশপুরের কিছু কৃষক মরসুমি আনাজ এই বাজারে পাইকারি বিক্রি করেন। ভগবানপুরের ভীমেশ্বরীতে সপ্তাহে দু’দিন আনাজের পাইকারি বাজারে উত্তর চব্বিশ পরগনা, উলুবেড়িয়া, সবং থেকে আনাজ আমদানি করা হয়। এ দিন সকালে ভগবানপুরে ভীমেশ্বরী, কাজলাগড় ও পটাশপুর মংলামাড়ো, অমর্ষি বাজার ঘুরে দেখেন বিডিও বিধানচন্দ্র বিশ্বাস। প্রতাপদিঘি-সহ একাধিক বাজারে আনাজের পাইকারি ও খুচরো দর যাচাই করেন বিডিও শঙ্খ ঘটক। এগরার দিঘা মোড়, বালিঘাই ও কুদি বাজারেও যান পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। এগরা শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করেন মহকুমাশাসক মনজিৎকুমার যাদব। প্রতিদিনের আনাজের দর লিখে ডিসপ্লে বোর্ড বাজার কমিটিগুলোকে ঝোলানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

তুলনায় পটাশপুর পালপাড়া কলেজ মোড়ে খুচরো আনাজের দর বেশি বলে দাবি প্রশাসনের। বাকি এলাকায় পাইকারি দর থেকে খুচরো দর ১০-১৫ টাকা বেশি। তা স্বাভাবিক বলেই ধরা হয়। বুধবার পটাশপুরে পাইকারি দর ছিল— আলু ৩৫ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঝিঙে ৩০, ঢ্যাঁড়স ৩৫ টাকা, দেশি পটল ৫৫ টাকা, কুঁদরি ৩৫ টাকা, শশা ২৮ টাকা, লঙ্কা ১৩০ টাকা, কুমড়া ২০ টাকা কেজি।

এগরার মহকুমাশাসক মনজিৎ বলেন, ‘‘পুলিশের উপস্থিতিতে একাধিক বাজারে পাইকারি ও খুচরো দামের ব্যবধান যাচাই করা হয়েছে। কোথাও খুব বেশি দরে আনাজ বিক্রি নজরে আসেনি। আগামীতে পাইকারি বাজারগুলি নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে।’’ তবে বাজারে বাজারে এই নজরদারিতে আদৌ আনাজের দাম কমে কিনা, সে দিকেই নজর আমজনতার।

আরও পড়ুন
Advertisement