BJP Party Office

ঠাঁই বদলে বিজেপি অফিস অধিকারী পাড়ায়

জেলা নেতৃত্ব ওই দাবি করলেও দলের আদি নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে। নতুন যে কর্যালয়টি করা হয়েছে, সেটি অধিকারী পরিবারের বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ লাগোয়া।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:০২
কাঁথিতে নয়া কার্যালয়ের উদ্বোধন।

কাঁথিতে নয়া কার্যালয়ের উদ্বোধন। —নিজস্ব চিত্র।

গেরুয়া শিবিরের দলীয় কার্যালয় উঠে এল ‘অধিকারী পাড়ায়’! লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি জেলা (কাঁথি) কার্যালয়ের এই স্থান পরিবর্তনে দলের অন্দরে প্রশ্ন, তাহলে জেলার রাশ পুরোপুরি তুলে দেওয়া হচ্ছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পরিবারের হাতে?

Advertisement

গত অগস্টে লোকসভা এলাকার বিন্যাসের কথা মাথায় রেখে সাংগঠনিক জেলাগুলি নতুন ভাবে ঢেলে সাজায় বিজেপি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার পূর্বতন সভাপতি সুদাম পণ্ডিতকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরিবর্তে জেলা সভাপতি হন বিধায়ক অরূপ দাস। এর কয়েকদিনের ব্যবধানে জেলা কার্যালয় বদলে ফেলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার কাঁথি শহরের কলেজ মোড়ে একটি ক্লাব ভাড়া নিয়ে সেখানে শুরু হয়েছে নতুন জেলা কার্যালয়। এ দিন ধর্মীয় রীতি মেনে পুজো পাঠ করে নতুন কার্যালয়ে গৃহ প্রবেশ করেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। এরপর সেখানে রাখিবন্ধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

গত পাঁচ বছর ধরে সাতমাইলে ছিল বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়। সেখানেও একটি ক্লাব ভাড়া নিয়ে চলত দলীয় কাজকর্ম। তবে ওই কার্যালয়টি এগরা বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত। যা মেদিনীপুর লোকসভা এলাকার অধীনে। সঙ্গত কারণে জেলা কার্যালয় কাঁথি শহর স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘আগের তুলনায় দল বড় হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পদাধিকারীদের আসা -যাওয়ার সমস্যার কথা মাথায় রেখে নতুন জেলা কার্যালয় হয়েছে। আগামী দিনে নিজস্ব জমিতে জেলা কার্যালয় গড়ে উঠবে।’’

জেলা নেতৃত্ব ওই দাবি করলেও দলের আদি নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে। নতুন যে কর্যালয়টি করা হয়েছে, সেটি অধিকারী পরিবারের বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ লাগোয়া। যে ক্লাবঘর ভাড়া নিয়ে কার্যালয় করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব, সেটির সঙ্গে আবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর সরাসরি যুক্ত। তিনি ওই ক্লাবের সম্পাদক পদে রয়েছেন। অধিকারী পরিবারের অন্য সদস্যদেরও ওই ক্লাবের নানা অনুষ্ঠানে দেখা যায়। অধিকারী পরিবারের দুই সদস্য শিশির অধিকারী এবং তাঁর ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ। কয়েকদিন আগে এগরা-২ এবং নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির সদস্য নির্বাচনে শিশির ও দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে বিজেপিকে সমর্থনের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। এরপর লোকসভা ভোটের আগে ‘শান্তিকুঞ্জে'র গা ঘেঁষে বিজেপির নতুন জেলা কার্যালয় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

অধিকারী পরিবার যে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত, সেখানেই কেন জেলা কার্যালয় করা হল, তাতে অসন্তুষ্ট আদি বিজেপি কর্মীর একাংশ। তাঁদের দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে কাঁথি শহরে একটি বড় ভবন ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। তার আগে পৃথক জেলা কার্যালয় ছিল। যদিও, বিজেপির জেলা নেতৃত্বর সাফ জবাব, স্থায়ী কার্যালয় তৈরির জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। তখন ওই ক্লাব থেকে কার্যালয় সরে যাবে। এদিন নতুন জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করেন জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অরূপ দাস। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন দুই জেলা সভাপতি তপন মাইতি এবং সুদাম পণ্ডিত, সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী প্রমুখ। এদিন সৌমেন্দুকে রাখি পরিয়ে দেন মহিলা মোর্চার কর্মীরা।

আরও পড়ুন
Advertisement