Cyclonic Storm

দিঘা, মন্দারমণির হোটেল খালি করতে হবে বুধবারের মধ্যেই! ‘ডেনা’র তাণ্ডবের আশঙ্কায় জারি নির্দেশিকা

দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুরের সমস্ত হোটেল থেকে পর্যটকদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকেরা যাতে হোটেলে-না থাকতে পারেন তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের তরফেও অভিযান চালানো হবে বলে খবর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ২২:২৬
Digha

দিঘার সমুদ্র। —নিজস্ব চিত্র।

ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র ঝাপটা পড়ার আগেই অশান্ত দিঘার সমুদ্র। মঙ্গলবার পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল দিঘার সৈকত। উল্টো দিকে, পর্যটকদের স্রোত বৃদ্ধি পাচ্ছে হোটেলগুলিতে। এই পরিস্থিতিতে নির্দেশিকা জারি করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। যেখানে হোটেলমালিকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, বুধবারের মধ্যে হোটেল খালি করে দিতে হবে পর্যটকদের। শুধু দিঘাই নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের শঙ্করপুর, মন্দারমণি, তাজপুরের হোটেলগুলির জন্য একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তার মধ্যে দিঘার সমস্ত হোটেল খালি করে দিতে হবে। পর্যটকেরা হোটেল ছেড়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে প্রশাসনের তরফে অভিযান চালানো হবে।’’

Advertisement

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে মঙ্গলবারই। বুধবার সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশা এবং বাংলার উপকূলে। কাতার ওই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে ‘ডেনা’। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। মঙ্গলবার জোয়ারের সময়েই দিঘার ‘ভয়ঙ্কর’ রূপ দেখা গিয়েছে। সেই রূপ দেখার জন্য সৈকত এলাকায় হাজির হয়েছিলেন পর্যটকেরা। কিন্তু হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস রয়েছে, ‘ডেনা’র প্রভাবে বুধবার থেকেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলা, যেমন দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনায় বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার পরিস্থিতি হয়ে উঠতে পারে আরও ‘জটিল’। ওই সময় সমুদ্রও উত্তাল থাকবে। সেই বার্তা মাথায় রেখে দিঘা-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় ৭৫ কিমি দীর্ঘ সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার সুরক্ষা জোরদার করার জন্য মঙ্গলবার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু-সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা এলাকা পরিদর্শনে যান। পরে জেলাশাসক জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কতা মেনে বুধবার বেলা ১২টার মধ্যেই সমস্ত হোটেল থেকে পর্যটকদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সময়সীমা পার হওয়ার পর পর্যটকেরা যাতে কোনও হোটেলেই না-থাকতে পারেন তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের তরফে অভিযান চালানো হবে। দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ছুটির মরসুম বলে মঙ্গলবারও দিঘায় ভালই ভিড় জমিয়েছিলেন পর্যটকেরা। অনেকে আবার ঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাস দেখার জন্য আগামী দু’দিন থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এমন অনেকেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হোটেল বুকিং করেছিলেন। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ শিরোধার্য। মঙ্গলবার সমুদ্রে নামায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর হোটেলবন্দি হয়েছিলেন অনেকে। এখন হোটেল থেকে সব পর্যটককেই বাড়িমুখী হতে হবে।

জেলা প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের গতিমুখ ওড়িশার অভিমুখে হলেও তার অভিঘাত দিঘায় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সমুদ্র উপকূল এলাকায় বুধবার থেকেই আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করবে। তার আগেই পর্যটকদের দ্রুত দিঘা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি হোটেলগুলিতেও নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement