উদ্বোধনের অপেক্ষায় নতুন জেলা আদালত। নিজস্ব চিত্র।
হাই কোর্টের আদলে মডেল আদালত তৈরি হয়েছে ঝাড়গ্রামে। এক ছাদের তলায় নতুন ওই ভবনে উঠে আসছে সব বিচারকের এজলাস। বাতানুকূল অত্যাধুনিক ভবনে রয়েছে নানা ব্যবস্থা। প্রায় ৯০ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হওয়া ওই জেলা আদালতের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে। যদিও তা হয়নি। অগস্টের মাঝামাঝি অথবা শেষ সপ্তাহে এটির উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রথমে ঠিক ছিল ২৭ জুলাই ওই নতুন আদালতের উদ্বোধন হবে। পরে ওই তারিখ পরিবর্তন হয়। তবে চূড়ান্ত উদ্বোধনের তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের উদ্বোধন করতে আসার কথা। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ঝাড়গ্রাম জেলা হওয়ার পর মহকুমা আদালতটি জেলা আদালতে উন্নীত হয়েছিল। তবে জেলা আদালতের কাজ চালু হতে আরও দু’বছর চলে যায়। ২০১৯ সালে অস্থায়ী ভাবে পূর্ত দফতরের সাবেক পরিদর্শন বাংলো চত্বরে সেই জেলা আদালত চালু হয়। জেলা আদালতের নতুন অত্যাধুনিক ছয়তলা বহুতল ভবন তৈরি করা হয়েছে পূর্বতন মহকুমা আদালত চত্বরে। খরচ হয়েছে ৯০ কোটি। কাজ করেছে পূর্ত দফতর।
জানা গিয়েছে, নবনির্মিত জেলা আদালতে ১৮ জন বিচারকের এজলাস রয়েছে। সব এজলাস বাতানুকূল। দেওয়ানি, ফৌজদারি, এসিজেএম, সিজেএম, প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত এবং দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত ছাড়াও জেলা বিচারকের এজলাস— সবই থাকবে একসঙ্গে। ১৮ জন এজলাস থাকলেও চালু হবে ৮টি আদালত। বিচারপ্রার্থীদের থাকা ও বসার ব্যবস্থা, সরকারি আইনজীবীদের পৃথক পৃথক চেম্বার থাকছে। লিফট থাকছে সাতটি। দু’টি বার অ্যাসোসিয়েশনের আলাদা ঘর থাকছে। এই ভবনেই থাকছে জিআরও কার্যালয়। বর্তমানে সেটি রয়েছে জেলাশাসকের কার্যালয়ে। আসামিদের প্রথমে সেখানে হাজির করানো হয়। তারপর আদালত চত্বরে আনা হয়। নতুন ভবন জিআরও অফিস চালু হলে অনেকটাই সময় বাঁচবে। নতুন ভবনে থাকছে সাক্ষীদের বসার ব্যবস্থা, মিটিংয়ের জন্য দু’টি হল। রয়েছে ক্যান্টিনের ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে পুরো ভবনটিতে রয়েছে দেড়শোটি ঘর। প্রায় কোটি টাকা খরচ করে কেনা হয়েছে আসবাবপত্র।
ঝাড়গ্রামের আইনজীবী কৌশিক সিনহা বলেন, "জেলায় উন্নত প্রযুক্তির সমস্ত ব্যবস্থা-সহ জেলা আদালতটির উদ্বোধন হবে। আগামীদিনের জেলার বিচারপ্রার্থীরা আইনি পরিষেবার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুবিধা ভোগ করবেন। সাক্ষীদের বসার ও বিশ্রামাগার তৈরি জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে। আদালতের ঘরগুলি শীততাপ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। সমস্ত আদালত এক ছাদের তলায় হওয়ায় সবার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে।" সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল জানান, নতুন আদালত ভবন অনেক জায়গায় হয়েছে। কিন্তু হাই কোর্টের আদলে ঝাড়গ্রাম জেলাতেই প্রথম।