Bridge Closed at midnapore

সেতু বন্ধ, ভোগান্তি এড়াতে ওয়াকিটকি

সাঁকোর দু’দিকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশকর্মীরা ‘ওয়াকিটকি’ ব্যবহার করছেন। কোন দিক থেকে কত লোক আসছে, আগাম জেনে নিচ্ছেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১৬
ঝুঁকির যাত্রা।

ঝুঁকির যাত্রা। —ফাইল চিত্র।

বন্ধ হল মেদিনীপুরের বীরেন্দ্র সেতু। পরশু, সোমবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। অনুমান সত্যি করে শুক্রবার থেকে নদীপথে যাতায়াত বেড়েছে। অনেকে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার করেছেন। কেউ কেউ নৌকায়। শহরতলিতে নদীর উপর একাধিক সাঁকো রয়েছে। নদীপথে একাধিক নৌকাও রয়েছে। সাঁকো কিংবা নৌকায় বাড়তি যাত্রী উঠে যেতে পারেন, এই আশঙ্কা রয়েছেই। পুলিশ, প্রশাসনের অবশ্য বক্তব্য, কড়া নজরদারি রয়েছে।

Advertisement

সাঁকোর দু’দিকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশকর্মীরা ‘ওয়াকিটকি’ ব্যবহার করছেন। কোন দিক থেকে কত লোক আসছে, আগাম জেনে নিচ্ছেন। সেই মতো পদক্ষেপ হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতেই এই ব্যবস্থা। পুলিশের দাবি, সাঁকো কিংবা নৌকায় যাতে অতিরিক্ত ভিড় না হয়, সে দিকে নজরদারি রয়েছে। ট্রেনযাত্রীও বেড়েছে। শুক্রবার সকালে মেদিনীপুর স্টেশনে থিকথিকে ভিড় দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। ওই রাতেই সেতুর কাছে যান জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। সবদিক খতিয়ে দেখেন তিনি। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সেতুর লোড টেস্টিং শুরু হয়েছে। এই চার দিন হয়তো একটু অতিরিক্ত জার্নি করতে হবে। কাজটা শেষ হলে, সকলের জন্য ভাল হবে। সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।’’

পরশু, সোমবার রাত পর্যন্ত বন্ধ থাকছে মেদিনীপুরের বীরেন্দ্র সেতু। সেই মতোই প্রশাসনিক নির্দেশিকা জারি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেতুর ভার বহন পরীক্ষা (লোড টেস্ট) শুরু হয়েছে। এই কাজের জন্যই সেতু বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত। এই সময়ে সেতুর উপর দিয়ে দু’চাকার কিংবা চার চাকার, কোনও রকম যানই চলাচল করবে না। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে ওই নির্দেশিকা কার্যকর হয়েছে। সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত ওই নির্দেশ বহাল থাকবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তারপর সেতু দিয়ে নিয়মমাফিক ফের যান চলাচল শুরু হবে।

মেদিনীপুর- খড়্গপুর সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সেতু। এর উপর দিয়েই চলে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। চার দিন সেতু বন্ধ থাকার জেরে চূড়ান্ত ভোগান্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা। এ দিন থেকে ভোগান্তি শুরুও হয়েছে। যাঁরা বাসে, বাইকে যাতায়াত করতেন, তাঁদের অনেকে নদীপথে, ট্রেনে যাতায়াত করেছেন। জেলা পুলিশ, প্রশাসনের অবশ্য দাবি, ভোগান্তি এড়াতে যাবতীয় আগাম পদক্ষেপ করা হয়েছে। কয়েকটি পরিবর্তিত রাস্তার মোড় (ডাইভারশন পয়েন্ট) চিহ্ণিত করা হয়েছে। যেখান থেকে গাড়িকে বিকল্প পথের সন্ধান দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাড়ি বাইপাস করা হচ্ছে। কিছু ডাইভারশন পয়েন্ট রয়েছে। প্রত্যেকটি পয়েন্টে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’’ বিকল্প রাস্তার একটি রুটম্যাপও প্রকাশ করেছে জেলা পুলিশ। জানানো হয়েছে, কোথা থেকে কোথায় পৌঁছতে হলে, বিকল্প হিসেবে কোন পথে যেতে হবে।

নদীপথে যাতায়াত বেড়েছে। পরিস্থিতি দেখতে এ দিন সকালে শহরতলির আমতলা ঘাটের কাছে গিয়েছিল পুরসভার দল। ছিলেন পুরপ্রধান সৌমেন খান। বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীরাও রয়েছেন এখানে। পুরপ্রধানের দাবি, সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করছেন। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সামাল দিতে যে যে পদক্ষেপ করার, সবই করা হয়েছে। জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসন, পুরসভা— সকলে সতর্ক রয়েছে। কোনও অসুবিধা হয়নি এখনও পর্যন্ত। বৃহত্তর স্বার্থে মেদিনীপুরবাসী সহযোগিতা করছেন।’’ তিনি মানছেন, ‘‘নদীপথে যাতায়াতে প্রথমের দিকে একটু চাপ ছিল। পরে পরিস্থিতি ঠিকঠাক হয়েছে। সাঁকোয় যে সংখ্যক মানুষের পারাপার হওয়ার কথা, সেই সংখ্যক মানুষই পারাপার হচ্ছেন। নজরদারি রয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা ঘাটের কাছে আলোর ব্যবস্থা করেছি। একটাই অনুরোধ, রাত দশটার পরে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন সাঁকো দিয়ে যাতায়াত না করেন।’’ এমনিতেই এখন কংসাবতীতে জল বেড়েছে। কয়েকটি ঘাটের উপরে জল উঠে গিয়েছে। তাই বাড়তি সতর্কতা। পুলিশ, প্রশাসন জানিয়েছে, সেতু বন্ধ থাকলেও অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়িকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সেতু দিয়ে যথারীতি অ্যাম্বুল্যান্স চলাচল করেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement