IRCTC

IRCTC: অভিযোগ তুলে নিলে তবেই পাবেন বিল! রেলের ‘দুর্নীতি’ ফাঁস হাওড়ার বাসিন্দার

আইআরসিটিসি-র পূর্বরেলের এইচআরডি ও জনসংযোগ আধিকারিক মধুমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁরা এই কাজ করেছেন, অভিযোগ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ১২:১৬
নগদ ১২০ টাকা ফেরতও দেওয়া হয় সৌভিককে। 

নগদ ১২০ টাকা ফেরতও দেওয়া হয় সৌভিককে।  নিজস্ব চিত্র।

রেলের আইআরসিটিসি-র প্যান্ট্রির খাবার নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন এক ব্যক্তি। অভিযোগ, প্যান্ট্রি কারের কর্মীরা খাবার দিয়ে সেই খাবারের বিল দিচ্ছেন না। সঙ্গে অধিক অর্থও চাওয়া হচ্ছে। অনেক সময় বিল পেলে দেখা যাচ্ছে, হয় সেই বিলে উল্লিখিত প্রতিটা পদ দেওয়া হয়নি, না হলে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হয়েছে। হাওড়ার বাসিন্দা সৌভিক সেনগুপ্ত সম্প্রতি তেমনই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে সৌভিক জানান, তিনি সপরিবার ধানবাদ থেকে আজমের-শিয়ালদহ এক্সপ্রেসে কলকাতা ফিরছিলেন, তখনই ওই ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ, ট্রেনটি দুপুরে আসানসোলে ঢোকার সময় প্যান্ট্রি থেকে খাবার বিক্রি করতে আসেন আইআরসিটিসি-র কর্মী। সৌভিক প্যান্ট্রির কর্মীর কাছে থেকে দু’টো ‘এগ মিল’ আর দু’টো ‘চিকেন মিল’ নেন। দাম বাবদ তাঁর কাছে ৫৬০ টাকা নেওয়া হয়। এর পর সৌভিক ওই কর্মীকে খাবারের বিল দিতে বললে ওই ব্যক্তি পরে বিল এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বর্ধমান পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বিল না আসায় সৌভিক পুরো বিষয়টি জানিয়ে ‘রেলওয়ে সেবা’-র টুইটার হ্যান্ডলকে জুড়ে টুইট করেন। ‘রেলওয়ে সেবা’-র পক্ষ থেকেও তাঁর অভিযোগে সাড়া দেওয়া হয়। এই ঘটনার কথা সৌভিক ফেসবুকের একটি গ্রুপে পোস্টও করেছিলেন।

Advertisement

অভিযোগ করার কিছু সময়ের মধ্যে প্যান্ট্রি ম্যানেজার বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করেন এবং তাঁর কামরার নম্বর জানতে চান। কিছু পরে উপস্থিত হন ওই ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি জানান, তিনি সৌভিককে বিল এনে দেবেন এবং পরিবর্তে সৌভিক যেন নিজের অভিযোগ তুলে নেন। ওই ব্যক্তি সৌভিককে আরও জানান, শিয়ালদহ নেমে সামনের দিকে এগিয়ে এলেই তিনি প্যান্ট্রি কারের সামনে থেকে তাঁকে বিল দিয়ে দেবেন।

এর পর ট্রেনটি শিয়ালদহ ঢুকতেই আবার ফোন আসে সৌভিকের কাছে। জানানো হয় ওই ব্যক্তি বিল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কাছে যেতেই ওই ব্যক্তি সৌভিককে একটি বিল দেন। পাশাপাশি ১২০ টাকা ফেরতও দেওয়া হয়। কিসের টাকা জিজ্ঞেস করা হলে জানানো হয় যে, এই টাকা তাঁর কাছে থেকে বেশি নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য সৌভিককে জোরও দেন ওই ব্যক্তি। এর পর বিল ও নগদ টাকার ছবি তুলে আবারও একটি টুইট করেন সৌভিক। প্যান্ট্রি কর্মীদের তরফ থেকে তাঁর কাছে কাকুতি-মিনতি করা হয় বলেও তাঁর দাবি।

সৌভিক আরও জানান, এর পর তাঁকে আরও অনেকবার ফোন করা হয়। পরে আইআরসিটিসি-র তরফ থেকে ফোন করে পুরো অভিযোগ শোনা হয় এবং কড়া পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেওয়া হয় বলেও তিনি দাবি করেন।

পাশাপাশি সৌভিক অভিযোগ জানিয়ে আরও বলেন, ‘‘আইআরসিটিসি-র খাদ্যতালিকা অনুযায়ী ‘এগ মিল’ ও ‘চিকেন মিল’-এর সঙ্গে রুটি বা পরোটা এবং দই দেওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের এর মধ্যে কিছুই দেওয়া হয়নি। আমাদের ২৫ টাকা দিয়ে দই কিনতে হয়েছিল।’’

এই বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফ থেকে আইআরসিটিসি-র পূর্ব রেলের এইচআরডি ও জনসংযোগ আধিকারিক মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি খোঁজ নিয়েছি। এ রকম কোনও অভিযোগ পাইনি। আমাদের কার্যনির্বাহী দলের তরফ থেকেও এই বিষয়ে কিছু জানে না। যাঁরা এই কাজ করেছেন, অভিযোগ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন