মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিপুল জয়কে সামনে রেখে আজ, সোমবার দলীয় বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে নতুন করে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক লক্ষ্য স্পষ্ট করে দিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই সর্বভারতীয় রাজনৈতিক আবহের প্রেক্ষিতে এই বৈঠকে দলের ভূমিকাও নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন তিনি। তবে দলের অন্দরে সাংগঠনিক রদবদলের প্রক্রিয়া নিয়ে যে চর্চা রয়েছে, সেই সম্পর্কে দলনেত্রী কিছু বলেন কি না, তা নিয়েই তৃণমূলের সব স্তরে কৌতূহল রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, নথিভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটির যে সভা করার কথা, আজ কালীঘাটে তৃণমূলের সেই বৈঠক ডাকা হয়েছে। দলের জাতীয় কর্মসমিতির এই বৈঠকে থাকবেন চেয়ারপার্সন মমতা ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট বিধি মতো এই বৈঠক হলেও নতুন বছর শুরুর আগে এই আসরে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কিছু বিষয় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হতে পারে। দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত, আর জি কর হাসপাতালের ঘটনার পরে শাসক দল ও সরকারের উপরে চাপ তৈরি হয়েছিল, তার মধ্যে ৬টি বিধানসভা আসনের জয় নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। সেই সঙ্গেই সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে মমতা এবং অভিষেক করণীয় নির্ধারণ করে দিতে পারেন। এই ক্ষেত্রে লোকসভার আসন্ন অধিবেশনে সংসদীয় দলের ভূমিকা কী হবে, তা-ও নেতৃত্বের ভাবনায় রয়েছে। প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (দু’জনেই জেলে) মতো দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যেরা না-থাকলেও জামিনে মুক্ত অনুব্রত মণ্ডল শীর্ষ কমিটির সদস্য হিসেবে এই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন। কালীঘাটের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন বীরভূমের শীর্ষ নেতা।
দলের একটি অংশ অবশ্য মনে করছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে ঘিরে সম্প্রতি কয়েকটি বড় বিষয় দলের সামনে এসেছে। কলকাতার এক পুর-প্রতিনিধির উপরে হামলার চেষ্টা হয়েছে, তার পরে সরাসরি পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। সূত্রের খবর, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ‘বিরক্ত’। একই সঙ্গে নানা স্তরের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সরকার ও প্রশাসন সম্পর্কে কিছু মন্তব্যে বিব্রত হতে হচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্বকে। দলের এক বিধায়ক সম্প্রতি অভিষেককে উপ-মুখ্যমন্ত্রী চেয়ে যে সব মন্তব্য করেছেন, তাতে অস্বস্তি ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিয়ে সব মহলেই আলোচনা হয়েছে। এই অবস্থায় এই রুটিন বৈঠক সামনে রেখে কড়া বার্তা দিয়ে দল পরিচালনায় নিজের কর্তৃত্বের বার্তা দিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী।
পাশাপাশি, দলের অভ্যন্তরীণ রদবদলের প্রশ্নেও এই বৈঠক ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে পুরোদস্তুর তৈরি করার প্রশ্নে ওই বিষয়েও নিজের মনোভাব স্পষ্ট করে দিতে পারেন মমতা।