AITC

Mamata Banerjee - IPAC: তৃণমূল-আইপ্যাক সম্পর্ক কি জুড়বে? যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন মমতা নিজে

তৃণমূল-আইপ্যাক সম্পর্ক কী ছিল এবং এই মুহূর্তে কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে, শাসকদলের অন্দরে এবং বাইরে এই কৌতুহল নানান জল্পনার জন্ম দিয়ে চলেছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:২৪
আইপ্যাক নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন মমতাই।

আইপ্যাক নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন মমতাই। ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূল আর সম্পর্ক রাখবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের সাত শীর্ষনেতার সঙ্গে ‘বিশেষ’ বৈঠকে তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে মমতা জানিয়েছেন, দরকার পড়লে প্রশান্তের সঙ্গে তিনি নিজে কথা বলবেন। তৃণমূলের সঙ্গে অতীতে আইপ্যাকের কী কথা হয়েছিল, আইপ্যাকের কী কী কাজ করার কথা ছিল, কী কী তারা কাজ করেছে, সব তিনি এ বার সরাসরি বুঝে নিতে চাইছেন।

তৃণমূল-আইপ্যাক সম্পর্ক ঠিক কী ছিল এবং এই মুহূর্তে সেই সম্পর্ক কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে, রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে-বাহিরে সর্বত্রই এখন এই কৌতূহল নানান জল্পনার জন্ম দিয়ে চলেছে। তবে ২০১৯ থেকে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত দু’পক্ষ নিজেদের মধ্যেকার ‘সুসম্পর্ক’ গোপন রাখেনি। গত কিছু দিন ধরে সেই সম্পর্কই যেন অন্য দিকে মোড় নিয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা এবং অভিষেক বাদে দলের অন্যান্য শীর্ষনেতাদের প্রতি আইপ্যাক কর্মীদের ভূমিকা দলে তীব্র অসন্তোষের জন্ম দিচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। নানান স্তর থেকে অভিযোগ শুনে তা খতিয়ে দেখার পর মমতা নিজেও এ নিয়ে বিরক্ত হয়ে উঠছিলেন। একদম সম্প্রতি পুরভোটের প্রার্থিতালিকা নিয়ে বিরোধ নতুন মাত্রা পায়। মমতার বিরক্তি ক্ষোভে বদলে যায়। দলের অনেক শীর্ষ নেতাও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে বিহিত চেয়েছিলেন বলে খবর।

Advertisement

মমতার মনোভাব প্রকাশ্যেই স্পষ্ট হয়েছিল তিনি লখনউ সফরে যাওয়ার দিন দমদম বিমানবন্দরে। আইপ্যাক সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। তাই এই সংক্রান্ত কোনও প্রশ্নের জবাব দেব না।’’ এর কিছুদিনের মধ্যেই, গত শুক্রবার আইপ্যাক আচমকাই মমতার অফিসিয়াল টুইটার পেজ আনফলো করে দেয়। এই খবর সামনে আনে আনন্দবাজার অনলাইন। সেই খবর চাউর হতেই মমতাকে ফের ফলো করা শুরু করে আইপ্যাক।

আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও চুক্তি হয়েছিল কি? আনন্দবাজার অনলাইনও আগে লিখেছিল দু’পক্ষের নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথা। কিন্তু সম্ভবত এমন কোনও লিখিত চুক্তি এদের মধ্যে হয়নি। আড়াই বছরের উপর দু’পক্ষের যে ‘সুসম্পর্ক’, তা এই মুহূর্তে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন তা বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু এই বিচ্ছেদ কি চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে? তৃণমূলের এক শীর্ষনেতার কথায়, এ কথা এখনও জোর করে বলা যাবে না। নেত্রী মমতা সবটা ভাল করে দেখে-বুঝে নেওয়ার পর তিনি নিজেই এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন। আপাতত অন্য কারও উপর তিনি ভরসা করছেন না।

২০১৫ সালে মমতার সঙ্গে আলাপ করেন প্রশান্ত। সে বছর অক্টোবরে মমতা পটনায় নীতীশ কুমারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন প্রশান্ত। সে বার জেডি (ইউ)-এর পরামর্শদাতা হিসেবে নীতীশ-লালু জুটিকে জয় এনে দিতে ‘বড় ভূমিকা’ নিয়েছিলেন পিকে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল ভবনে এসে প্রশান্ত বৈঠক করে গিয়েছিলেন মমতার সঙ্গে। কিন্তু সে বার আলোচনা তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের তুলনামূলক খারাপ ফলের পর প্রশান্ত ফের যোগাযোগ শুরু করেন তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে। প্রথমে দিল্লিতে তৃণমূলের এক রাজ্যসভার সাংসদের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁর। পরে কলকাতায় অভিষেকের কালীঘাটের দফতরে এসে বৈঠক করে যান। সে সময়ও দলে পিকে-কে পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মমতাই। পরবর্তীতে প্রশান্ত বা তাঁর আইপ্যাকের সঙ্গে দৈনন্দিন সম্পর্কের দায়িত্বে ছিলেন অভিষেক।

আরও পড়ুন
Advertisement