Mamata Banerjee and Jindal Power Project

সমালোচনা করতে পারেন, কিন্তু আমায় উপেক্ষা করতে পারবেন না! বিদ্যুৎকেন্দ্রের শিলান্যাস করে নিন্দকদের বার্তা মমতার

চলতি বছরের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে শালবনিতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার ঘোষণা করেছিল জিন্দল গোষ্ঠী। সেখানে তারা ৮০০ মেগাওয়াটের দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলতে ১৬,০০০ কোটি টাকা লগ্নি করছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৫৭
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

রাজ্যে শিল্প নেই বলে যাঁরা তাঁর সরকারের সমালোচনা করে থাকেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির শিলান্যাসের অনুষ্ঠান থেকে তাঁদের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ‘‘আমার সমালোচনা করতে পারেন, কিন্তু আমায় উপেক্ষা করতে পারবেন না।’’ মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসের মতো কোনও বিরোধী দলের নাম নেননি। কিন্তু ওই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে তিনি তাঁর সকল ‘সমালোচক’কে একই বন্ধনীতে ফেলে দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আলাদা করে তো আর মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনার প্রয়োজন নেই। যাঁরা বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে থাকেন, সেই সব শিল্পপতিদের গত আট বছরের ট্র্যাক রেকর্ড দেখুন। দেখুন, তাঁদের বিনিয়োগ কোন কোন রাজ্যে হয়েছে। এখন শিল্পের উপযুক্ত জায়গা উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড। এক জন বাঙালি শিল্পপতি বড় ফ্যাক্টরি তৈরি করেছেন গোয়ায়। অসমেও উনি ফ্যাক্টরি খুলবেন। জমি খুঁজছেন। এই তো পশ্চিমবঙ্গের শিল্পের চেহারা।’’

চলতি বছরের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে শালবনিতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার ঘোষণা করেছিল জিন্দল গোষ্ঠী। সেখানে তারা ৮০০ মেগাওয়াটের দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলতে ১৬,০০০ কোটি টাকা লগ্নি করছে। সোমবার সেই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বলছেন, কিছু হচ্ছে না, তাঁরা নিজের চোখে দেখুন কী ছিল আর কী হয়েছে। জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানারও উদ্বোধন করেছিলাম আমি। এখানে এখন কাজ চলছে। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে কত প্রস্তাব এসেছিল, কত কার্যকর হয়েছে। সে সব হিসেব আমি দিয়েছি। ১৯ হাজার কোটি বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল। ১৬ হাজার কোটির কাজ চলছে। বাকি প্রকল্পের কাজও দ্রুত শুরু হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘আমরা বলি না, আমরা কাজ করে দেখাই। আগে বলা হত, লোডশেডিংয়ের সরকার, আর নেই দরকার। এখন মানুষ ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পান।’’ সাংসদ দেবও বলেছেন, ‘‘যাঁরা বলেন, বাংলার উন্নতি হচ্ছে না, তাঁরা এসে দেখা যান, কী ভাবে বাংলার উন্নতিতে কাজ করে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি খুবই খুশি যে, এটা শালবনিতে হল। এ রাজ্যে আরও বড় বড় শিল্প আসবে।’’

শালবনির মঞ্চ থেকে একাধিক ঘোষণাও করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, বক্রেশ্বর-দুর্গাপুরে ৬৬০ মেগাওয়াটের দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। ৮০০ মেগাওয়াটের আরও দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে সাঁওতালডিতেও। বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে আরও ৪৮ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলায় ছ’টি ইকনমিক করি়ডোর তৈরি হচ্ছে। পুরুলিয়ায় বিনিয়োগ করবে পাঁচটি বড় শিল্পসংস্থা। রাজ্য স্কিল ট্রেনিং সেন্টারও তৈরি করবে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘সকলে কাজের মধ্যে থাকুন। মনে রাখবেন, ইতিবাচকতাই মনের জোর বাড়ায়। পজ়িটিভ কথা শুনলে চাঙ্গা হতে পারবেন। আর নেগেটিভ কথা শুনলে তা মনের মধ্যে গেঁথে থাকে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন