ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে ভিড় বাড়ছে। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার রাতে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করেন চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ। সেখানে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে হুঁশিয়ারি দিলেন। তাঁদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক রঙ না লাগানোর বার্তা দিলেন কিঞ্জল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এই কর্মসূচিকে বিশেষ কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে প্রটার করছে। আমরা তাদের নিন্দা করি। আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক।’’
সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত বাড়ছে। তবে ধর্মতলা চত্বরে ভিড় কিন্তু এখনও কমেনি।
এ বার সাধারণ মানুষের কাছে আর্থিক আবেদন করলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর তরফে অনশনমঞ্চের সামনে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হচ্ছে।
পোস্টার হাতে এক আন্দোলনকারী। —নিজস্ব চিত্র।
অশনশনরত জুনিয়র ডাক্তার সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা বলেন, ‘‘আমরা ৯ অগস্টকে ভুলব না। আমাদের শরীর দুর্বল। কিন্তু আমাদের মনোবল কমেনি। আজ এত মানুষের ভিড়। সকলে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালাচ্ছেন, বিচারের দাবি তুলছেন। এই ভিড় আমাদের মনোবল বৃদ্ধি করছে।’’
জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকা সমাবেশে যোগ দিলেন নকশালপন্থী আন্দোলনের অন্যতম নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন তিনি। হাঁটাচলার ক্ষমতা নেই। কিন্তু হুইলচেয়ারে চেপেই শুক্রবার ধর্মতলায় এলেন অসীম।
নকশালপন্থী আন্দোলনের অন্যতম নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
নবমীর সন্ধ্যায় জনজোয়ার ধর্মতলায়। ভিড় বাড়ছে। রাস্তায় বসে ‘ভিন্ন পুজো’ উদ্যাপন করছেন হাজার হাজার মানুষ। সমবেত স্বরে গাইছেন, ‘আগুনের পরশমণি’।
সাধারণ মানুষের জমায়েত ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
দুপুরে পর থেকেই অনশনমঞ্চের সামনে ভিড় বাড়ছিল। বিকেল গড়াতে সেই ভিড় আরও বাড়ে। এত জমায়েতের জেরে কার্যত অবরুদ্ধ ধর্মতলার একাংশ। অনশনমঞ্চের সামনের রাস্তা— ডোরিনা ক্রসিং থেকে কেসি দাস পর্যন্ত পথে বন্ধ গাড়ি চলাচল। সেখানে শুধুই সাধারণ মানুষের ভিড়।
অনশনমঞ্চের সামনের রাস্তা অবরুদ্ধ। —নিজস্ব ছবি।
ধর্মতলায় পৌঁছেছেন বাম নেতৃত্ব। রয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, রামচন্দ্র ডোম, সূর্যকান্ত মিশ্র। তবে তাঁরা অনশনমঞ্চ থেকে খানিকটা দূরেই আছেন।
ধর্মতলা চত্বরে বাম নেতৃত্ব। —নিজস্ব ছবি।
ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘বেশ কিছু রাজনৈতিক দল বিষয়টা (জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন) এমন ভাবে দেখানোর চেষ্টা করছে, যেন এই ডাক তাদের। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা বার বার বলছি দলীয় স্বার্থ এবং পতাকা দূরে রেখে, যে কোনও মানুষ যোগ দিতে পারেন। এই আন্দোলনকে হাইজ্যাক করা চেষ্টা হচ্ছে। অনুরোধ করব তেমন যেন না করা হয়।’’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি দেবাশিস হালদার। —নিজস্ব ছবি।
‘মহাসমাবেশ’-এ দলীয় কর্মীদের যেতে বলেছে বামফ্রন্ট। ডাক্তারদের ‘মহাসমাবেশ’কে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমর্থন করেছে তারা। রাজ্য বামফ্রন্টের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সাধারণ মানুষকে শুক্রবার বিকালে ধর্মতলায় ডাক্তারদের ডাকা সমাবেশে অংশ নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে। এ-ও বলা হয়েছে, কোনও রকমের সাংগঠনিক পতাকা নিয়ে যেন কেউ না আসেন। নাগরিক হিসাবেই যেন কর্মসূচিতে অংশ নেন। সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই বহু বামকর্মী ট্রেনে বাসে চেপে ধর্মতলায় এসে পৌঁছছেন। অনেকে আসছেন।
শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই ধর্মতলা চত্বরে ভিড় বাড়ছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে মঞ্চে হাজির সিনিয়র ডাক্তারেরা। শুধু তাঁরা নন, সাধারণ মানুষও ভিড় করছেন ধর্মতলা চত্বরে। সমাবেশে যোগ দিতে দূর-দূরান্ত থেকে নাগরিকেরা ইতিমধ্যেই উপস্থিত হয়েছেন ধর্মতলায়।
অনশনমঞ্চে ভিড় সাধারণ মানুষের। —নিজস্ব চিত্র।
আন্দোলনের ঝাঁজ বৃদ্ধি করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। জেনারেল বডি (জিবি) বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তারদের মিলিত মঞ্চ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর তরফে জানানো হয়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ধর্মতলার অনশনমঞ্চ সংলগ্ন অঞ্চলে সমাবেশ করবে তারা।