CPM Rally

বামফ্রন্টের মহামিছিল ৩ তারিখ, পথে কংগ্রেসও

মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, দিপু দাস, বিকাশ ঝা, পৌলবি মজুমদার, দেবাঞ্জন দে-সহ সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠনের যে ৭ জন নেতা-নেত্রীকে নোটিস পাঠিয়েছিল পুলিশ, তাঁরা এ দিন সন্ধ্যায় লালবাজারে গিয়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১৭
লালবাজারে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় -সহ সিপিএমের যুব, মহিলা ও ছাত্র নেতৃত্ব।

লালবাজারে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় -সহ সিপিএমের যুব, মহিলা ও ছাত্র নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।

আর জি কর-কাণ্ডে ন্যায়-বিচার ও অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে এবং স্বাস্থ্য-দুর্নীতির প্রতিবাদে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মহামিছিলের ডাক দিল বামফ্রন্ট। ‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো’— এই আহ্বানকে সামনে রেখে সে দিনের মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজাবাজার ট্রাম ডিপো থেকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পর্যন্ত ৩ তারিখের মিছিলে শামিল হওয়ার কথা বামফ্রন্টের রাজ্য নেতৃত্বের। আর জি করের ঘটনার তদন্ত এখন করছে সিবিআই। সেই তদন্তের দিকেও ‘নজর’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাম নেতৃত্ব। এর পরে ‘আর জি করের মাথা ধরো’র দাবিকে সামনে রেখে সিজিও কমপ্লেক্স বা নিজ়াম প্যালেসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের পরিকল্পনাও রয়েছে বামেদের।

Advertisement

‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজে’র ডাকে আজ, মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে আগেই জানিয়েছেন বাম নেতৃত্ব। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য ফের দাবি করেছে, বিজেপির পাশাপাশি বামেদের একাংশও ওই কর্মসূচিতে শামিল হতে পারে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সোমবার পাল্টা বলেছেন, ‘‘চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যায় বিচার চেয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছে। তাকে ঘুরিয়ে চেনা রাজনৈতিক দ্বৈরথে পরিণত করা হচ্ছে। যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে, তাকে বিপথে চালানোর জন্য বিজেপির মতো সমান সক্রিয় হয়ে উঠেছে তৃণমূলও।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সেই ৯ অগস্ট থেকে চিকিৎসক হত্যায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলছে। মহিলারা ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে রাস্তা দখল করেছেন। তখন এই ‘ছাত্র সমাজ’ কোথায় ছিল?’’ একই ভাবে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী বললেন গুলি চলতে পারে, তৃণমূলের কুণালেরাও প্রায় একই কথা বলছেন। মূল বিষয় থেকে নজর ঘোরাতে আবার কি চিত্রনাট্য তৈরি হচ্ছে?’’

মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, দিপু দাস, বিকাশ ঝা, পৌলবি মজুমদার, দেবাঞ্জন দে-সহ সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠনের যে ৭ জন নেতা-নেত্রীকে নোটিস পাঠিয়েছিল পুলিশ, তাঁরা এ দিন সন্ধ্যায় লালবাজারে গিয়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। পরে মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘নির্যাতিতার ধর্ষণ ও হত্যায় দোষীদের শাস্তি, আর জি করে ঢুকে তাণ্ডবে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বার করে শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চলবেই। লালবাজার আন্দোলন আটকাতে পারবে না!’’

নবান্ন অভি‌যান প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এর আগে বলেছিলেন, তিনি ছাত্রদের পাশে আছেন, দরকারে অভিযানে যাবেনও। কিন্তু ‘ছাত্র সমাজে’র পিছনে বিজেপি ও তাদের শাখা সংগঠন রয়েছে, এই তথ্য পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পরে কংগ্রেসের মধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠছিল। তার প্রেক্ষিতে অধীর সোমবার বলেছেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, ছাত্রেরা ডাকলে যাব। আমাকে কেউ কিছু তার পরে বলেনি। বহরমপুরে আছি, ভাল করে জানতাম না। আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন। তাঁদের প্রতিবাদে আমরা থাকতেই পারি, ১৪ অগস্ট রাতে যেমন ছিলাম।’’ তিনি জানিয়েছেন, ২৯ অগস্ট কলেজ স্কোয়ার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত প্রদেশ কংগ্রেসের মিছিল হবে, দলের নেতা-কর্মীরা সেখানেই যোগ দেবেন। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি শুভঙ্কর সরকারেরা এ দিন একই সুরে বলেছেন, হাথরস, উন্নাও-সহ একাধিক ঘটনায় যাদের গায়ে দাগ লেগে আছে, সেই বিজেপির বকলমে কোনও কর্মসূচিতেও কংগ্রেসের ছাত্র-যুবদের যোগ দেওয়ার প্রশ্ন নেই। ছাত্র পরিষদের নতুন রাজ্য সভানেত্রী প্রিয়ঙ্কা চৌধুরীর বক্তব্য, আর জি কর-কাণ্ড এবং পরীক্ষা-দুর্নীতির প্রতিবাদেই এ বার ২৮ অগস্ট সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশ হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement