গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বিধানসভায় গিয়ে নবনির্বাচিত ছয় বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার রাজভবন থেকে বিধানসভার সচিবালয়কে এমনটাই জানানো হয়েছে। সোমবার বিধানসভায় আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকছে। অর্থাৎ, রাজ্যপাল এবং বিধানসভার মধ্যেকার যে দূরত্ব রচিত হয়েছিল, তা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
সম্প্রতি রাজ্যের ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। ফলপ্রকাশের পর দেখা যায় সব ক’টিতেই জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। বিধানসভায় শপথগ্রহণের পর তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় কাজ শুরু করতে পারবেন। চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই তাঁদের শপথপর্ব মিটতে পারে, সেই সম্ভাবনা ছিলই। তবে সংশয় ছিল কে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন, রাজ্যপাল না কি বিধানসভার স্পিকার? কারণ, অতীতে বিধায়কদের শপথ নিয়ে রাজভবন-বিধানসভার মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার সেই কৌতূহলের নিরসন হল। শনিবার রাজ্যপালের দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরার কথা। অন্য দিকে, সোমবার বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বৈঠক করতে পারেন মমতা। এ ছাড়াও ওই দিন বিধানসভায় ওয়াকফ বিল বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। অন্য দিকে, বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলায় কোনও রকম রাজনৈতিক অচলাবস্থা চাইছে না কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সমীকরণে নিজ নিজ অনড় অবস্থান থেকে সরে গিয়ে এক মঞ্চে আসতে সম্মত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল। এমনটাই জানা যাচ্ছে রাজভবনের একটি সূত্রে।
এর আগের উপনির্বাচনে জয়ী হওয়া তৃণমূল প্রার্থীদের শপথ নেওয়া নিয়ে কম জটিলতা হয়নি। সাংসদ হওয়ার পূর্বে যখন বিধায়ক পদে জিতেছিলেন নির্মলচন্দ্র রায়, সে সময় থেকেই শপথবাক্য পাঠ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল দ্বন্দ্বের শুরু হয়। তার পর বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেনের শপথবাক্য কে পাঠ করাবেন এবং কোথায় শপথগ্রহণ হবে সে নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এ বার অবশ্য সেই আশঙ্কা থাকল না।
গত ২৩ নভেম্বর ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের ফলপ্রকাশের পরই বিধানসভার তরফে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শপথের বিষয়টি নিয়ে রাজভবনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। পরে পরিষদীয় দলের তরফেও রাজ্যপালের কাছে বার্তা পাঠানো হয়। অবশেষে শুক্রবার রাজভবনের তরফে ওই বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপের আশ্বাস মিলেছে। সাধারণত এ সব ক্ষেত্রে রাজ্যপাল স্পিকারের উপরই শপথের দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। আগে কয়েক বার এমনই হয়েছে। তবে এ বার রাজ্যপাল বোস নিজেই বিধানসভায় এসে নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথ পড়াতে চেয়েছেন।