R G Kar Hospital Incident

আর জি কর হাসপাতালে সুবিচারের ‘কলরব’, লঙ্ঘিত শব্দমাত্রা

পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, এ দিন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শব্দের মাত্রা কখনও ছিল ৬৬.৭ ডেসিবেল, কখনও ৭১.৬ ডেসিবেল। অর্থাৎ, তথ্যেই পরিষ্কার যে, শব্দপ্রাবল্য নির্ধারিত মাত্রার থেকে বেশি ছিল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৫৬
আর জি করের সামনে মাইক নিয়ে মিছিল। মঙ্গলবার।

আর জি করের সামনে মাইক নিয়ে মিছিল। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

সময় যত গড়াচ্ছে, ততই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ছে আর জি কর-কাণ্ডে। আন্দোলন ক্রমশ হাসপাতালের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। তবে, আন্দোলনের গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ও সংলগ্ন চত্বরে শব্দপ্রাবল্যও বাড়তে শুরু করেছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য জানাচ্ছে, মঙ্গলবার প্রায় সারা দিনই হাসপাতাল চত্বরে শব্দের মাত্রা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ১.৩ গুণ থেকে প্রায় দেড় গুণ বেশির মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কলরব, মাইকে ঘোষণা, বাইরে গাড়ির আওয়াজ— সব মিলিয়ে শব্দমাত্রা লঙ্ঘিত হয়েছে বার বার।

Advertisement

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্ধারিত মাপকাঠি অনুযায়ী, শিল্প (ইন্ডাস্ট্রিয়াল), বাণিজ্যিক (কমার্শিয়াল), বসতি (রেসিডেন্সিয়াল) ও শব্দহীন (সাইলেন্স জ়োন) এলাকার জন্য দিনে (সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা) নির্ধারিত শব্দমাত্রা হল যথাক্রমে ৭৫, ৬৫, ৫৫ ও ৫০ ডেসিবেল। রাতে নির্ধারিত শব্দমাত্রা হল যথাক্রমে ৭০, ৫৫, ৪৫ ও ৪০ ডেসিবেল। অর্থাৎ, ‘সাইলেন্স জ়োন’ হওয়ার সুবাদে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নির্ধারিত শব্দমাত্রা হল দিনে ও রাতে যথাক্রমে ৫০ ও ৪০ ডেসিবেল। কিন্তু মঙ্গলবার শব্দের প্রাবল্য হাসপাতাল ও সংলগ্ন এলাকার চত্বরে প্রায় সব সময়েই নির্ধারিত মাত্রার থেকে বেশি ছিল বলে জানা গিয়েছে।

পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, এ দিন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শব্দের মাত্রা কখনও ছিল ৬৬.৭ ডেসিবেল, কখনও ৭১.৬ ডেসিবেল। অর্থাৎ, তথ্যেই পরিষ্কার যে, শব্দপ্রাবল্য নির্ধারিত মাত্রার থেকে বেশি ছিল। তবে সূত্রের খবর, এ দিন ব্যতিক্রম নয়। ধারাবাহিক ভাবেই আর জি কর হাসপাতাল ও সংলগ্ন চত্বরে শব্দের প্রাবল্য বেশি থাকে। খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্দোলন হয়তো সেই মাত্রাকে কিছুটা বাড়িয়েছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল চত্বর বছরের সারা সময়েই শব্দ-উপদ্রুত থাকে।

অবশ্য শুধু আর জি কর হাসপাতালই নয়, যেখানে শব্দের প্রাবল্য সব থেকে কম হওয়ার কথা, শহরের সেই একাধিক হাসপাতাল চত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় শব্দের লাগাতার উপদ্রব চলে বলে জানাচ্ছে একাধিক সরকারি রিপোর্ট। যেমন, ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সে বছর ডিসেম্বরে আর জি কর হাসপাতালে দিনে ও রাতে শব্দমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৬৭ ও ৫৯ ডেসিবেল। আবার এসএসকেএম হাসপাতালের সামনে দিনে ও রাতে ওই মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৬৮ ও ৬৫ ডেসিবেল। হাসপাতাল চত্বরে মাইকের ব্যবহার নিয়ে এক আন্দোলনকারীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে, তার কাছে আমাদের আন্দোলনের আওয়াজ কিছুই নয়। আর আমরা তো শুধু এ ক’দিন মাত্র বিক্ষোভ করছি, তা-ও শান্তিপূর্ণ ভাবে, বছরের অন্য দিনগুলোয় এখানে কী হয়, কেউ দেখতে আসেন?’’ আর এক আন্দোলনরত পড়ুয়ার কথায়, ‘‘নেতা-মন্ত্রীরা বছরের বেশির ভাগ সময়ে আইন ভাঙার জন্য মাইক ব্যবহার করেন। প্রতিনিয়ত তাঁরা আইন ভাঙেন। আমরা সেখানে আইনে সুবিচারের আশায় মাইক ব্যবহার করেছি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement