হাওড়া স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় সিংহভাগ হোটেলেরই ব্যবসা স্থাপন ও ব্যবসা চালানোর ছাড়পত্র নেই। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ১৪টি হোটেলের মধ্যে মাত্র তিনটি হোটেলের ওই ছাড়পত্র রয়েছে। বাকিরা কেউই তাদের ছাড়পত্র দেখাতে পারেনি। পরিদর্শনের সময়ে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরিদর্শক দলের।
হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন হোটেলগুলির জন্য গঙ্গা দূষিত হচ্ছে, এই অভিযোগে জাতীয় পরিবেশ আদালতে বর্তমানে একটি মামলা চলছে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে রিপোর্ট দাখিল করতে বলে।
পর্ষদ সূত্রের খবর, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সংস্থার আধিকারিকেরা। সেখানে তাঁরা দেখতে পান, ১৪টির মধ্যে মাত্র তিনটি হোটেলের ব্যবসা স্থাপন (কনসেন্ট টু এস্টাব্লিশ) ও ব্যবসা চালানোর (কনসেন্ট টু অপারেট) ছাড়পত্র রয়েছে। যার মধ্যে দু’টির মেয়াদ হল ২০২৬ সালের ৩১শে জানুয়ারি এবং একটির ২০২৬ সালের ৩১শে জুলাই পর্যন্ত। কিন্তু পরিদর্শনের সময়ে ওই ছাড়পত্র দেখাতে পারেনি বাকি
হোটেল ও খাবারের দোকান। বরং গঙ্গাপাড় জবরদখল করে একাধিক হোটেল রয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রের খবর। অথচ, সে সবের তরল বর্জ্য পরিশোধনের জন্য বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট (এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা ইটিপি) নেই। ওই হোটেলের তরল বর্জ্য সরাসরি হাওড়া পুরসভার নিকাশি নালা বা গঙ্গায় গিয়ে মিশছে। পরিদর্শন চলাকালীন আধিকারিকেরা জানতে পারেন, হোটেলগুলি ওখানে দীর্ঘ বছর ধরে রয়েছে।
তাদের দাবি, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর কর্তৃপক্ষের (কলকাতা বন্দর) কাছ থেকে তারা এক সময়ে জায়গা ভাড়া নিয়েছিল।
মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানাচ্ছেন, ২০০৭ সালে পর্ষদের তরফে ওখানকার হোটেলগুলিকে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যা চ্যালেঞ্জ করে তারা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু হাই কোর্ট স্থানান্তরের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমনকি, পর্ষদ একাধিক হোটেল বন্ধের নির্দেশ দিলেও তা অমান্য করে সেগুলি রমরমিয়ে চলছে। যার জেরে গঙ্গা দূষিত হয়েই চলেছে।’’ মামলার পরবর্তী শুনানি আজ, শুক্রবার।